সুরমা মাছ ও টুনা মাছের পার্থক্য ও টুনা মাছের দাম বাংলাদেশ

টুনা মাছের দাম বাংলাদেশ


সূচীপত্রঃটুনা মাছের দাম বাংলাদেশ । টুনা মাছ সম্পর্কে ইতিমধ্যে অনেক জেনেছেন ইন্টারনেটের আশীর্বাদে। আমাদের দেশে আগে টুনা মাছ সম্পর্কে তেমন জানা ছিলোনা। কিন্তু এখন টুনা মাছ সম্পর্কে জেনেছেন এবং টুনা মাছের দাম বাংলাদেশ এ কত হতে পারে সেই সম্পর্কে যখন জানতে এসেছেন । 

আমি কি আসলেই ঠিক কথা বলেছি ? হ্যা তাহলে চলুন আজকে আমরা জেনে আসি টুনা মাছের দাম বাংলাদেশ এ কত হতে পারে সেই সম্পর্কে। শুধু কি টুনা মাছের দাম সম্পর্কে জানবো ?  


না টুনা মাছ সম্পর্কে আরও অনেক কিছু জানবো যেমন, টুনা মাছ কোথায় পাওয়া যায়, টুনা মাছ চেনার উপায়, টুনা মাছের উপকারিতা, সুরমা মাছ ও টুনা মাছের পার্থক্য এবং টুনা মাছের বাংলা নাম কি ? বিশদ ভাবে আমরা এই টুনা মাছ নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টায় থাকবো আপনারাও সাথে থাকবেন। 

টুনা মাছ কোথায় পাওয়া যায়


টুনা মাছের দাম বাংলাদেশ এ কত সেটা জন্য আমরা একটু পরে কিন্তু আগে জানবো টুনা মাছ কোথায় পাওয়া যায় এই নিয়ে। টুনা মাছ সাধারণত মিঠা পানিতে পাওয়া যায় না। এটি খুবই জনপ্রিয় একটি সামুদ্রিক মাছ বলে পরিচিত।


এটির বাসস্থল সাধারণত গভীর সমুদ্র অঞ্চলে। এদের বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সাগরে হতে মহাসাগরে পর্যন্ত দেখা মিলে। বিশেষ করে ভারত, আটলান্টিক এবং প্যাসিফিক মহাসাগরে ও এদের বাসস্থল বা এদের দেখা যায়।


শুধু টুনা মাছ বললেই হয় না এদের কিছু প্রজাতি রয়েছে। যেমন ব্লুফিন টুনা, ইয়েলোফিন টুনা এবং বিগইয়েল টুনা মাছ।  


বঙ্গোপসাগরে অর্থাৎ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সাগর টুনা ধরা পড়ে আমাদের দেশের জেলেগুলির হাতে। টুনা মাছ ধরার ভালো কৌশল জানতে হয় না হলে এদের ধরার গঠিন হয়ে পড়ে। মৎস্যজীবীরা টুনা মাছ ধরার জন্যে বিশেষ নৌকা ব্যবহারের মাধ্যমে এদের ধরে থাকে। কারণ এই টুনা মাছ সমুদ্রের গভীরে থাকে। 

টুনা মাছ চেনার উপায়


টুনা মাছ বর্তমানে ইন্টারনেটের আশীর্বাদে সবাই চিনে। তারপর ও আমরা একটু টুনা মাছ নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করি। যদিও আমাদের এই নিবন্ধ হচ্ছে টুনা মাছের দাম বাংলাদেশ সম্পর্কে। তারপর টুনা মাছ চেনার উপায় গুলি জেনে রাখা দরকার। 


টুনা মাছ চেনা খুবই সহজ একটি ব্যাপার যদি আপনি এর কিছু বৈশিষ্ট জানেন। টুনা মাছের শরীরের আকৃতি লম্বা ও পুরু হয়ে থাকে, এতে করে টুনা মাছ খুবই সহজে দ্রুত সাঁতার কাটতে পারে। 


টুনা মাছের নিচের দিকে থাকে সাদা এবং উপরের দিকের রং হলো চকচকে নীল বর্ণের। টুনা মাছের এই মিশ্র বর্ণ মৎস শিকারদের কাছ থেকে তাদের আত্মরক্ষা করে। শিকারিরা একটু বিভ্রান্তি হয় তাদের এই মিশ্র বর্ণের কারণে। 


টুনা মাছের পিছনের পাখনা খুব শক্ত ও লম্বা হয়ে থাকে দ্রুত সাঁতার কাটার জন্যে খুবই উপযোগী বলে ধরা হয়। সামনের পাখানা গুলি পিছনের পাখানা থেকে তুলনামূলক ভাবে ছোট হলেও এই পাখানা গুলি ও যথেষ্ট সহযোগিতা করে সামনের দিকে এবং উপরের দিকে উঠতে পারে। 



টুনা মাছের মুখ খুবই প্রশস্ত এবং অর্ধবৃত্তাকার। টুনা মাছের শিকার করার জন্যে খুবই সহযোগিতা করে থাকে। তাদের চোখ গুলি খুবই বড় হয়ে থাকে যা সমুদ্রের গভীরে গিয়ে শিকার করতে খুবই সাহায্য করে থাকে।  


টুনা মাছের মাংস লাল হয়ে থাকে এবং বেশ মজবুত বাজারে টুনা মাছ প্রায়ই সুশি এবং সাশিমির জন্য ব্যবহৃত হয়, যা এর জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে তোলে।

টুনা মাছের উপকারিতা


টুনা মাছের দাম বাংলাদেশ সম্পর্কে জানার আগে টুনা মাছের উপকারিতা সম্পর্কে জানা খুবই দরকার। কারণ টুনা মাছের উপকারিতা সম্পর্কে জানলে দামটা বেশি হলেও মনের মধ্যে কোন দ্বন্ধ থাকবে না কেনার জন্যে। টুনা মাছের উপকারিতা সম্পর্কে আমরা নিচে লিস্ট আকারে বলার চেষ্টা করেছি।

  • টুনা মাছের উপকারিতার মধ্যে প্রথমে যেটি বলা যায় সেটি হলো টুনা মাছ খুবই উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ যা খুব সহজে পেশী গঠন ও মেরামতের কাজ করে থাকে।  
  • দুর্লভ যে ওমেকা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড খুবই কম পাওয়া যায় সেই প্রোটিন আপনি এই টুনা মাছের মধ্যে পাবেন কারণ এই ওমেকা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে আনে। 
  • খুবই ভালো পরিমানে ভিটামিন ডি-এর উৎস রয়েছে যা, একজন মানুষের দাঁত ও হাড়ের জন্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 
  • এই টুনা মাছের উপকারিতার হিসেবে মানুষের শরীরের মধ্যে যে লোহা প্রয়োজন তা এখানে পেয়ে যাবেন যা রক্ত সঞ্চালনের জন্যে এবং অনিমিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষেত্রে। 
  • এই টুনা মাছ সালাদের সাথে বা স্যান্ডুউইজ সাথে খাওয়া যায় সহজে। 
  • মানুষের মস্তিষ্কের কার্য ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে খুবই সহায়ক।
  • টুনা মাছের কিছু উপাদান শরীরের কোষগুলোকে ফ্রি র্যাডিক্যাল থেকে রক্ষা করে।
  • এই মাছের অভ্যাসে শরীরের ডায়েট করার ক্ষেত্রে যুক্ত করতে পারেন। 

সুরমা মাছ ও টুনা মাছের পার্থক্য


সুরমা মাছ ও টুনা মাছের পার্থক্য রয়েছে অনেকটা। যদিও সুরমা মাছ ও টুনা মাছ দুটোই সামদ্রিক মাছ। তবে এদের প্রজাতি হিসেবে ও অনেক রকম ভিন্নতা দেখা যায় । 

প্রজাতি ও চেহার

সুরমা মাছের গায়ে কিছু দাগ থাকে এবং স্লিম ও ছোট  হয়ে থাকে। ঠোট লম্বা হয় সুঁচের মত। 

টুনা মাছ অনেক প্রজাতিতে বিভক্ত থাকে এরা বড় দেহের হয়ে থাকে। 

স্বাদ ও টেক্সচার

সুরমা মাছ স্বাদের ক্ষেত্রে মিষ্টি ও মৃদু হয় মাংস নরম হয়ে থাকে যা খুব সহজে রান্না করতে পারে। 

অন্যদিকে টুনা মাছের স্বাদ খুব তীব্র হয়ে থাকে এর টেক্সচার ঘন হয় এটি দিয়ে স্টিক বা গ্রিল করতে খুবই আদর্শ। 

পুষ্টিগুণ

সুরমা মাছ এবং টুনা মাছ দুটোর মধ্যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড বিদ্যমান। তবে টুনা মাছের পুষ্টিগুণ সুরমা মাছের তুলনায় একটু বেশি শক্তিশালী বলে বিবেচনা করা হয় এবং হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 


টুনা মাছের দাম বাংলাদেশ

ব্যবহৃত রান্না পদ্ধতি

সুরমা মাছ সাধারণত ভাজা বা ঝোল করেই রান্না করা হয়। টুনা মাছকে বেশিরভাগ সময় সিজনিং করে গ্রিল বা স্টেক বানানো হয়।

বাজারে প্রাপ্যতা 

সুরমা মাছ লোকাল বাজারে সহজে পাওয়া যায়।  কিন্তু টুনা মাছ সববময় পাওয়া যায় না কারণ এটি বিদেশী মাছ হিসাবে খুবই পরিচিত। 

সুরমা মাছ ও টুনা মাছের মধ্যে আরো কিছু মূল পার্থক্য


সুরমা মাছের গড় আকার ৩ মিটার এবং টুনা মাছের গড় আকার প্রজাতি ভেদে ১-২ মিটার। 

সুরমা মাছের গড় ওজন ২৩০ কেজি পর্যন্ত আর টুনা মাছের গড় ওজন প্রজাতি ভেদে ২০ থেকে ২০০ কেজি। 

সুরমা মাছের বাসস্থান হচ্ছে গভীর সমুদ্রে আর টুনা মাছের বাসস্থান হচ্ছে উপকূলীয় ও গভীর সমুদ্রে। 

সুরমা মাছের সামনে তলোয়ারের মত নাক থাকে আর টুনা মাছের উচ্চ গতিতে সাঁতার কাটার ক্ষমতা থাকে। 

টুনা মাছের বাংলা নাম


টুনা মাছের বাংলা নাম " টুনা " মাছ । এই টুনা মাছকে টুনা নামে চিনে থাকে সবাই। তবে এই টুনা মাছের বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে Thunnus ( টুনাস ) । তবে অনেক সময় এই টুনা মাছকে " পোলক " অথবা " শুকনা " হিসেবে অনেকে ডেকে থাকে। 

টুনা মাছের দাম বাংলাদেশ


টুনা মাছ যেহেতু বিদেশি মাছ হিসাবে পরিচিত সেহেতু চাহিদা রয়েছে এই মাছের বেশি। টুনা মাছের বাণিজ্যিক ভাবে ভালো চাহিদা রয়েছে বিশেষ করে কৌটাজাত টুনা মাছের । বিশ্বব্যাপী টুনা মাছের বাণিজ্যিক মূল্যে প্রায় ৪২ বিলিয়ন ডলার।


আগেই বলে দেওয়া ভালো যে, টুনা মাছের বিভিন্ন রকম প্রজাতি রয়েছে। তবে উন্নত প্ৰজাতের টুনা মাছ আমাদের মত বাংলাদেশে প্রায় আসে না বললেই চলে।টুনা মাছের দাম বাংলাদেশ এ নির্ভর করে মৌসমের উপর ভিত্তি করে। 


যদি মাছ শিকারে টুনা মাছ বেশি ধরা পরে তাহলে দাম একটু কম থাকে আবার কম মাছ ধরা হলে দাম একটু বেশি হয়ে তাকে। তবে টুনা মাছের দাম বাংলাদেশ এ কেজিতে ৭০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। 


তাও আবার কিছু বিশেষ প্রজাতির উপর। যেমন জাপানি টুনা এবং ব্লু ফিন টুনা মাছ। এই টুনা মাছ গুলি হাজারের ও উপরে দাম হয়ে থাকে আমাদের বাংলাদেশে। 


অনেক সময় আবার আপনি টুনা মাছ সাইজে ছোট গুলি ২৩০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০০ টাকার ভিতরে ও পেয়ে যাবেন। আমাদের দেশে টুনা মাছের দাম প্রায় সময় পরিবর্তনশীল।

টুনা মাছের দাম বাংলাদেশ সম্পর্কে লেখকের শেষ মন্তব্য


পরিশেষে এই কথায় বলার থেকে যে, টুনা মাছ খুবই সুস্বাদু এবং টুনা মাছের দাম বাংলাদেশ এ এখনো মোটামুটি সাশ্রয়ী হিসেবে পেয়ে থাকি। খুবই ভিটামিন ও প্রোটিন সমৃদ্ধ এই টুনা মাছের চাহিদা দিন দিন আরো বাড়ছে। তাই টুনা মাছের দাম নিয়ে চিন্তা না করে স্বাস্থ্য সচেতনার দিকে নজর দিলে দাম মনের দিক থেকে তেমন বেশি বলে মনে হবে না।

টুনা মাছের দাম ৩১ লাখ ডলার

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪