বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপ মোকাবেলার উপায়
সূচীপত্রঃবয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপ মোকাবেলার উপায় । বয়ঃসন্ধিকাল কাটেনি এমন কোন মানুষ পাওয়া বড়ই দুষ্কর। বয়সন্ধিকালে অনেক কিছুর পরিবর্তন ঘটে সাথে মানসিক চাপ ও শুরু হয়ে যায়। কারণ এটি হলো একটি নতুন জীবনে পদার্পন করা। এই সময় শরীরের ও মনের ছন্দ পরিবর্তন হয়। তাই আজকে এই বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপ মোকাবেলার উপায় নিয়ে আলোচনা করবো এবং বয়ঃসন্ধিকালের বিভিন্ন দিক নিয়ে তুলে ধরার চেষ্টা করবো ।
বয়ঃসন্ধিকাল কি এবং কেন হয় ?
বয়ঃসন্ধিকাল কি, এটি অনেকে জানেনা। শুধু যারা এই বয়ঃসন্ধিকাল ফেলে এসেছে তারাই জানে। বয়ঃসন্ধিকাল হলো কিশোর বা কিশোরী থেকে প্রাপ্ত বয়সের দিকে অগ্রসর হওয়াকে বলে। শুধু বলে বললেই তো হয় না এটি কেন হয় সেই সম্পর্কে আমরা আরো একটু গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করি।
এই বয়ঃসন্ধিকাল সাধারণত ৯ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে ১৬ থেকে ১৯ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে থাকে। এই সময়কালে একজন কিশোরের শরীরের অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়ে থাকে। এই সময় নতুন জীবন শুরু হয়।
বিভিন্ন রকম হরমোনের আবির্ভাব হয় ও শরীরের পরিবর্তন ঘটে। যেমন, কণ্ঠস্বর পরিবর্তন হয়, উচ্চতা বৃদ্ধি হয়, শরীর চুল গজানো শুরু করে এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ঋতুস্রাব শুরু হয়ে থাকে।
যে হরমোন গুলির আবির্ভাবের ফলে শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন হয় সেগুলি হলো গোনাডোট্রপিন হরমোন। এটি মস্তিস্ক থেকে নিঃসৃত হয়ে থাকে। এই হরমোন শরীরের উপস্থিত থাকা টেস্টোস্টেরন ও ইস্ট্রোজেন নামক হরমোনের উৎপাদন বাড়িয়ে তুলে।
যা একজন মানুষের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যেঙ্গকে প্রভাবিত করে। যা পরিবর্তন ও বিকাশ ঘঠায়। নিজেদের সম্পর্কে ভালো করে বুজতে পারেন এবং নিজের পরিচয় সম্পর্কে জানতে পারে।
ভিবিন্ন রকম সামাজিক ও মানসিক পরিবর্তনের সম্মুখীন হয়ে থাকেন। বয়ঃসন্ধিকালের এই পরিবর্তনগুলো প্রাকৃতিক এবং সঠিক দিকনির্দেশনা ও সমর্থনের মাধ্যমে এই সময়কালটি স্বাভাবিকভাবে পার করা সম্ভব।
বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপ কি
কিশোর জীবনে মানসিক চাপ তেমন দেখা যায় না কিন্তু বয়ঃসন্ধিকাল এলেই এটির প্রভাব বেশি পড়ে অর্থাৎ মানসিক ভাবে ও তিনি বেড়ে উঠে। তাই মানসিক চাপের একটি প্রভাব বৃদ্ধি পাই। মানসিক চাপ বিভিন্ন রকম হতে পারে।
যেমন শারীরিক পরিবর্তনের চাপ, সামাজিক চাপ, পড়াশোনার দায়িত্বের চাপ এর সাথে নিজেকে পরিচয় গঠন করার সংগ্রাম। এই সময় শরীরে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মেজাজ সঠিকভাবে কাজ করে না অনেক সময় মেজাজ উঠানামা করে থাকে। এটিও একটি মানসিক চাপ।
এই সময়ে অনেকে হতাশায় ভুগে, উদ্ভেগ তৈরি হয় আবার অনেকের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি থাকে যা মানসিক চাপে রূপান্তরিত হয়। তছাড়াও রয়েছে পড়াশোনার চাপে মানসিক চাপে রূপান্তরিত হয়। বন্ধুবান্দবের মধ্যে সম্পর্কের ছোট কোন কারণও মানসিক চাপ তৈরী করে।
বয়ঃসন্ধিকালে আরো নানা রকম নতুনত্বের সন্ধান আসে জীবনে এবং সেইগুলর চাপ এক সময় গিয়ে না পাওয়ায় মানসিক চাপে পরিবর্তন হয় । আমরা ধীরে ধীরে বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপ মোকাবেলার উপায় সম্পর্কে জানার চেস্টা করবো ।
বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপের লক্ষণ
বয়ঃসন্ধিকালে অনেক রকম চাপের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় এবং নিজেকে সামাল দেওয়া খুবই কষ্ঠদায়ক। কিভাবে বুজবেন বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপের লক্ষণ গুলি কি ? এই টপিকে আমরা জানবো বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপের লক্ষণ সমূহ।কারন লক্ষণগুলি না জানলে বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপ মোকাবেলার উপায় সমূহ আমরা জানতে পারবো না ।
- অল্প কথায় রেগে যাওয়া
- মেজাজ খিটখিটে থাকা
- ঘুম না হওয়া বা ঘুম ভেঙে যাওয়া
- অতিরিক্ত ঘুম হওয়া
- হটাৎ ওজন কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়া
- ক্ষুদা কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়া
- নিজের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব
- নতুন কিছুকে বরন করতে ভয় পাওয়া
- পড়াশোনায় অমনোযোগিতা
- গুরুত্বপূর্ণ কাজ ভুলে যাওয়া
- পরিবারের সাথে সময় কাটাতে অনীহা
- মাথাব্যথা বা পেটব্যথা এছাড়াও আরো অন্যান্য শারীরিক সমস্যা
- জীবনের প্রতি উদাসীনতা
বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপ কমানোর কৌশল
বয়ঃসন্ধিকালের সমস্যা গুলির মোকাবেলা করতে অনেক কিছুর দ্বারস্থ হতে হয়। বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপ কমানোর কৌশল সম্পর্কে জানার দরকার হয় । কারন এই কৌশল ও হচ্ছে বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপ মোকাবেলার উপায় । না হলে অনেক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়। নতুন জীবন গঠন করার জন্যে মাত্র জীবন শুরু হয়েছে। এই সময় নিজেকে সংযমের মাধ্যমে নিম্নোক্ত কৌশল গুলি আমরা মেনে চলবো।
আপন মানুষের সাথে সময় কাটানো
আপন বলতে আপনি যাকে খুব বিশ্বাস করেন এবং ভরসা করেন তার সাথে সময় কাটান। তার সাথে মনের ভাব আদান প্রদান করুন। এতে করে আপনার মানসিক চাপ অনেকটা কেটে যাবে।
ধর্মীয় কাজে নিজেকে নিয়োজিত করা
ভিবিন্ন ধর্মীয় কাজে নিজেকে নিয়োজিত করুন। যেমন প্রার্থনা, নামাজ অথবা ধর্মীয় বক্তার সাথে কথপোকথন বা তাদের বক্তৃতা বা কথা শোনা। বিভিন্ন ধর্মীয় মন্দির, মসজিদ অথবা পেগোডা তাছাড়াও তীর্থস্থান গুলি ঘুরে দেখা। ঐখানের কাজ গুলি নিজের মত করে করার চেষ্টা করুন। মাঝের মধ্যে ধর্মীয় কাজে যুক্ত হয়ে বিনাস্বার্থে কাজ করুন। এতে করে বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপ অনেকাংশে দূর হবে কারণ এটি একটি প্রধান কৌশল।
প্রতিদিন কিছু সময় হাঁটার অভ্যাস করা
একঘেয়েমি জীবন থেকে পরিত্রান পেতে কাজের ফাঁকে বা পড়াশোনার ফাঁকে হাটতে বের হয়ে পড়ুন এবং এটিকে অভ্যাসে পরিণত করুন। হাটতে হাটতে মানুষের জনজীবনের মানুষের সমস্যাগুলি উপভোগ করুন তাদের সাথে ভাব বিনিময় করুন । এটিও বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপ মোকাবেলার উপায় হিসেবে ভালো কাজ দেবে ।
স্বাসপ্রশ্বাসের নিয়ন্ত্রণ করা
আমাদের স্বাস প্রশ্বাস যত বেশি দ্রুত হয় ততবেশি আমাদের মনের চঞ্চলতা বৃদ্ধি পায়। স্বাস প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণের মাধ্যম হিসেবে মেরুদন্ড সোজা করে বসে ৫ সেকেন্ডের জন্যে স্বাস নিন গভীর ভাবে। এবার ৮ সেকেন্ডের জন্যে ধরে রাখুন আবার ৪ সেকেন্ডের ভিতরে স্বাস ছাড়ুন। এই পদ্বতি অনুসরণ করলে অনেকটা মন নিয়ন্ত্রণে এসে যায়। এই পদ্বতি নিয়মিত করতে থাকুন তাহলে বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপ কমানোর কৌশল হিসেবে খুব অগ্রগামী কাজ করবে।
প্রিয় গৃহপালিত পশু অথবা বাদ্যযন্ত্রের সাথে সময় কাটানো
ঘরে গৃহপালিত যেকোন পশু যেমন কুকুর, বিড়াল অথবা কবুতর এদের সাথে সময় কাটান। মনের আনন্দে তাদের সময় দিন। এছাড়াও ঘরে আপনি যে বাধ্যযন্ত্র বাজাতে ভালোবাসেন যেমন হারমোনিয়াম, গিটার, তবলা, পিয়ানো, বাঁশি অথবা দুতরা যেকোন বাদ্যযন্ত্র যেটি আপনি বাজাতে ভালোভাবেন সেগুলি বাজান এবং মনের আনন্দে গান করুন। এটি ধারাবাহিকতা রক্ষা করুন। তাহলে এই বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপ অনেক কমে যাবে।
ডিজাটাল ডিভাইস থেকে নিজেকে দূরে রাখা
ডিজিটাল ডিভাইস মনের মধ্যে গভীর ছাপ ফেলতে সহায়তা করে। ডিজিটাল ডিভাইস যত সম্ভব প্রয়োজন ছাড়া ব্যবহার করবেন না। এটি আপনার মনের চাপ আরো বাড়িয়ে দিতে পারে । ডিজিটাল ডিভাইস বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপ মোকাবেলার উপায় কে প্রতিরোধ করে ।
ভ্রমণ করা
মাঝের মধ্যে নতুন জায়গায় ভ্রমণ করতে যাবেন। অথবা নদীর কাছে না হলে সবুজ বনায়নে বা পাহাড়ে ভ্রমণ করুন নিজেকে হারিয়ে ফেলুন প্রাকৃতিক সুন্দর্যের কাছে। এতে করে আপনার মন প্রফুল্ল থাকবে। এটিও বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপ কমানোর দারুন কৌশল।
যোগব্যায়াম করা
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে যোগব্যায়াম করুন। যোগব্যায়ামের বিভিন্ন আসনগুলি অনুসরণ করুন। এতে করে আপনার মানসিক চাপ দূর হবে এবং স্বাস্থ্য ও খুব ভালো সুন্দর থাকবে।
পছন্দের কাজ গুলি করা
আপনার মনের বিরুদ্ধে কোন কাজ করবেন না। আপনার পছন্দের কাজগুলি করুন মনের আনন্দে যে কাজগুলি আপনি করতে সাচ্ছন্দবোধ করেন। যেমন গাছ লাগানো, গাছে পানি দেওয়া, পশুপাখিকে খাবার খাওয়ানো, গরিব দুঃখীদের সেবা করা, ঘর পরিষ্কার করা , বই পড়া অথবা বিভিন্ন রকম খেলা। মোট কথা হলো মনকে আনন্দ দিতে হবে যেকোন পর্যায়ে তাহলে বয়ঃসন্ধিকালের মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাবেন।
বয়ঃসন্ধিকালের মানসিক চাপ কমানোর কৌশল হিসেবে উপরক্ত কাজগুলি আপনি করতে পারেন। এই কাজগুলি আপনাকে খুব আনন্দ দেবে এবং জীবনকে নতুন করে চেনার জন্যে খুবই সহযোগিতা করবে।
বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপের চিকিৎসা
বয়ঃসন্ধিকালে বিভিন্ন কিছু পরিবর্তনের কারণে মনের উপরে ও অনেক চাপ পড়ে। বয়সন্ধিকালে মানসিক চাপের চিকিৎসা গুরুত্বপূর্ণ। তবে এই ক্ষেত্রে পরিবারের আপন মানুষেদের কাছে থাকা বেশি জরুরি। এই সময় পিত মাতা ভাই বোন দের কাছে থাকা দরকার।
বয়ঃসন্ধিকালের কিশোরের মনের ভাব জানতে চাওয়া। তার মনের অবস্থা বুঝে তার সাথে মেলামেশা করা। এই পদ্বতিকে চিকিৎসা বলে ধারণা করা হয়। তবে একজন কিশোরের অন্তত রাত্রের বেলায় ৮ থেকে ১০ ঘন্টা পর্যন্ত ঘুমানো খুবই ভালো শরীরের জন্যে ও মনের জন্যে।
মানসিক চাপ কমাতে চিকিৎসা হিসেবে যোগব্যায়াম, ধ্যান এবং প্রাণায়াম গুলি সম্পর্কে ধারণা দেওয়া খুবই জরুরী। এর সাথে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের প্রয়োজন। সামাজিক সমর্থন ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর সাথে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সান্নিধ্যে নিয়ে যাওয়া দরকার এবং কাউন্সিলিং করা দরকার।
বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপ কমানোর প্রাকৃতিক উপায়
বয়সন্ধিকালে মানসিক চাপ বেশি দেখা যায় সেহেতু আমাদের মধ্যে একটু প্রকৃতির সাথে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া বা প্রাকৃতিক ভাবে নিজের মনের গতিবিধি পরিবর্তন জরুরি। আমরা বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপ কমানোর প্রাকৃতিক উপায় সম্পর্কে নিচে লিস্ট আকারে বলার চেষ্টা করছি।
- সকালে ঘুম থেকে উঠে গভীর স্বাস নেওয়া আবার প্রশ্বাস ছাড়া এই পদ্বতি অনুসরণ করা এতে মনের চাপ অনেকটা কমে যায় মন স্থির হয়।
- বিকেলে পার্কে ঘুরতে যাওয়া
- ঘুম থেকে উঠে কিছুক্ষন হাটা অথবা দৌড়ানো
- নিত্যদিন ধ্যান করার ইচ্ছা বাড়িয়ে তুলা
- যোগব্যায়ামের অভ্যাস করা
- সাইকেল চালানো
- বিভিন্ন রকম পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করা
- পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুম নিশ্চিত করা।
উপরোক্ত কথাগুলি মেনে চললে প্রাকৃতিক উপায়ে আপনার অনেকাংশেবয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপ মোকাবেলার উপায় হিসেবে কাজ করবে । যারা সাধক কিংবা যোগীরা এই প্রাকৃতিক উপায়ে নিজেদের রক্ষা করেন অর্থাৎ নিজের মনকে সংযম রাখেন ।
বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপ মোকাবেলার উপায় নিয়ে শেষ কথা
যেহেতু এই বয়সন্ধিকালে মানসিক চাপ একটি প্রকৃতি গত কারণ সেহেতু আমাদেরকে প্রাকৃতিক ভাবেই নির্মূল করতে হবে। বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপ মোকাবেলার উপায় হিসেবে প্রাকৃতিকভাবে নিজেকে তৈরী করতে হবে যেন মনোবল বৃদ্ধি পায়। কারণ এই প্রথম নতুনভাবে মানসিক চাপ তৈরি হওয়া শুরু হয়। তাই উপরোক্ত বিষয়গুলি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলে এবং সচেতনতার সহিত নিজের মনকে ধারণ করলে এই সমস্যা থেকে খুব দ্রুত উত্তরণ হতে পারবেন বলে আমাদে বিশ্বাস ।
আপনার জন্যেঃ মানসিক বিকাশ - কৈশোর, সামাজিকীকরণ, পরিপক্কতা
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url