চালাক মানুষ চেনার উপায়
আজকে যদিও আমাদের আর্টিকেল হলো চালাক মানুষ চেনার উপায় তারপর ও আমরা একই আর্টিকেলে শারীরিক গঠন দেখে মানুষ চেনার উপায়, বিপদে মানুষ চেনার উপায়, সহজ সরল মানুষ চেনার উপায়, মূর্খ মানুষ চেনার উপায়, হাসি দেখে মানুষ চেনার উপায় এবং বুদ্ধিমান মানুষ চেনার উপায় এই সব নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করবো।
কারণ মানুষ চেনার উপায় জানাটা আমাদের জন্যে খুবই প্রয়োজন। না হলে আপনি অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা ধীরে ধীরে বিস্তারিত জানবো ।
মানুষ চেনার জন্যে কেন উপায় খোঁজা প্রয়োজন
আমরা জানি মানুষ মানে হলো যার বোধজ্ঞান আছে বিবেক আছে এবং সচরাচর জীবন যাপনে মানুষের কল্যাণের জন্যে একে ওপরের সহযোগিতা, সহমর্মিতার মাধ্যমে মনুষ্যত্ত্বের পরিচয় দিয়ে থাকেন।
আসলে আমরা যা জানি মানুষ কিন্তু সেই গুণাবলী হারিয়েছে বলেই আমাদের কে মানুষ চেনার জন্যে আলাদা করে পড়ালেখা করতে হচ্ছে । আপনি জানেন কোন পশুর বাচ্চা জন্ম নিলে থাকে পশু বলি যেমন গরুর কাছ থেকে বাচ্চা জন্ম নিলে আমরা থাকে বলি গরুর বাচ্চা বা শুকরের বাচ্চা।
এইটা স্বাভাবিক ভাবে বলে থাকি । কিন্তু আপনি কি জানেন মানুষের কাছ থেকে জন্ম নিলেই আমরা থাকে মানুষ বলি না। কারণ তার আসল মানুষের পরিচয় হলো মনুষ্যত্ব অর্জন করা। মনুষ্যত্ব অর্জন করলেই তাকে মানুষের বাচ্চা বলা যায়। তাহলে ভেবে দেখুন তো মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব।
অথচ এই মানুষকে যদি পশুর চরিত্রে দেখেন তাহলে আপনি তাকে মানুষ বলে বিবেচনা করবেন ? অবশ্যই না। তাই আমাদের কে ও মানুষ চেনার উপায় গুলি খুঁজতে হয় বা জানতে হয় ।
মানুষ চেনা কেন বেশি প্রয়োজন তাহলো আসলে প্রতিদিন যেহেতু আমাদেরকে মানুষের সাথে চলতে হয় বা লেনাদেনা কার্যকলাপ করতে হয়ে সেহেতু আমাদের কে মানুষ চেনার উপায় গুলি খুবই প্রয়োজন সহকারে জানতে হবে ।
মানুষের চরিত্র সম্পর্কে ধারনা
আর এখন তো ভিবিন্ন রকম ফাঁদ বের হয়েছে আপনি কিভাবে ঠকিয়ে সে আপনার অর্থ আত্মসাৎ করার জন্যে পায়তারা করছে কিভাবে বুজবেন বা চিনবেন আসল মানুষ কে ভালো মানুষ কে অথবা চালাক মানুষ কে। কিভাবে চালাক মানুষ চিনার উপায় খুঁজে পাবেন ?
আবার অনেক সময় ভালো মানুষ তার ভালো চরিত্রের জন্যে তার উপযুক্ত সন্মান পাই না। এই সমস্ত নিত্যদিনের সমস্যা থেকে বাঁচতে নিজেকে প্রোটেক্ট রাখতে মানুষ চেনার উপায় গুলি জানা খুবই জরুরি।
শারীরিক গঠন ও চেহারা দেখে মানুষ চেনার উপায়
শারীরিক গঠন দেখে মানুষ চেনার উপায় সমূহের মধ্যে বিশেষ করে যাদের গলা খুব লম্বা তারা খুব ভোগ বিলাসী হয়ে থাকে। বিলাসিতার জন্যে তারা অনেক ধন সম্পত্ত্বি খরচ করেন।
আবার যাদের ঘাঁড় সুন্দর তারা কিছু খুবই ধনবান হয়। এর সাথে যাদের মুখ চওড়া হয় তারা খুব আত্মবিশ্বাসী হয়ে থাকে। আবার যাদের মুখ লম্বা আকৃতির তারা খুব বিবেচক হয়। সব কিছু বিবেচনা করে নিজেকে সেই মত করে পরিচালনা করে থাকে।
আবার যাদের চেহারা গোল হয়ে থাকে তারা বিশেষ করে ধনী হয়ে থাকে। কিন্তু এই সব হলো শরীরের গঠন হিসেবে কিছুটা ধারণা দেওয়া যে মানুষের মন কেমন। কিন্তু আপনি কি জানেন আপনার মনের উপর নির্ভর করে আপনার এই শরীর নির্মাণ হয়েছে ?
এইগুলি হলো জ্যোতিষ বিজ্ঞানীদের জ্যোতিষ শাস্ত্রের লিপিবদ্ধ কথা । আর জ্যোতিষ শাস্ত্রের ধারণা দিয়ে তো প্রকৃতির অবস্থা নির্ণয় করে থাকে। সেইভাবে একজন মানুষের শারীরিক গঠনের উপর নির্ভর করে জ্যোতিষ বিজ্ঞানিরা এই মানুষ চেনার উপায় সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন।
আরো অনেক তথ্য এই জ্যোতিষ বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে, বিপদে মানুষ চেনার উপায়,সহজ সরল মানুষ চেনার উপায়, মূর্খ মানুষ চেনার উপায়, হাসি দেখে মানুষ চেনার উপায় ও বুদ্ধিমান মানুষ চেনার উপায় কি এই সব কিছু সম্পর্কে অনেক ধারণা দিয়েছেন। এই সব ধারণা দেওয়ার মানে কি। যাতে আপনার জীবনে চলার পথে কিছুতে আপনি না ঠকেন সেই কারণে ।
বিপদে মানুষ চেনার উপায়
প্রেম প্রীতি সোহার্দ্যতা ভাগ করে নিতে হয়। তাছাড়াও সমাজে আমাদের অনেক মনের মানুষ থাকে । যাদের সাথে আমাদের প্রতিদিনের কথপোকথন ভাব বিনিময় করে থাকি বা করতে হয় । এইটা সমাজের একপ্রকার বাধ্য বাদকতার কাজ ।
যেহেতু আমরা মানুষ ছাড়া চলতে পারবো না। কিন্তু বিপদে মানুষ কিভাবে চিনবেন বা বিপদে মানুষ চেনার উপায় কি। আসলে যারা খুবই সহজে অন্যের দুঃখকে নিজের মনে করবে তারাই তো বিপদে আসল মানুষ বা আসল বন্ধু। কিছু টপিক তুলে ধরি বিপদে মানুষ চেনার উপায় সম্পর্কে।
- বিপদে আপনার সমস্যা সম্পর্কে জেনে আপনার পাশে গিয়ে নিজ দায়িত্বে যিনি দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি হলে বিপদের দিনে আপন মানুষ।
- বিপদে যারা আপনার খবর অন্য কারো কাছে শুনেও বসে থাকার পাত্র নই তারা প্রথমে খুবই ভালো বন্ধু।
- বিপদে যারা গিয়ে আপনার পরিবারের দায়িত্ব নিতে কুন্ঠিত বোধ করবে না তারা ভালো মানুষ বা বিপদের বন্ধু।
- যিনি ভালো কিছু দেখিয়ে দেন এবং মন্দ কিছু থেকে আপনার শুধরানোর চেষ্টা করেন তিনিও আপন মানুষ।
- কেউ যদি আপনার পরিবারের নাম দুর্নাম করে তখন উপযাচক হয়ে আপনার পরিবারের পাশে দাঁড়ায় যিনি তিনি বিপদে আপন মানুষ।
- বিপদের দিনে যিনি আপনাকে সবসময় মনে সাহস জোগাবে তিনিই আপন মানুষ।
- আপনার মনের বিপর্যয়ে যিনি আপনার মনে সাহস সঞ্চয় করেন তিনি আপন মানুষ।
- যিনি আপনাকে আসলেই খুব ভালোবেসে আপনার খবরাখবর নেয় গোপনে এবং আপনার মন্দ স্বভাব সম্পর্কে জেনেও আপনাকে পরিত্যাগ করে নি পরন্তু আপনাকে সেই মন্দ ভাব থেকে ভালো কিছুতে আনার জন্যে আপনার পাশে থাকে তিনিই তো আপনার বন্ধু।
- যিনি আপনার সব গোপন কথা জানেন কিন্তু নিজে আপনার গোপনীয়তা রক্ষা করেন তিনিও আপনার আপন মানুষ।
সহজ সরল মানুষ চেনার উপায়
নিজে দুঃখ পেয়েও সহজে অন্যকে হাসি মুখে সুখের বার্তা দিতে পারেন যিনি তিনি হলেন সহজ সরল মানুষ। সহজ সরল মানুষ চেনার উপায় গুলি আমরা নিচে লিস্ট আকারে বলার চেষ্টা করছি।
- নিজে কষ্ট পেয়ে অন্যকে সুখী করার প্রয়াস যার তিনি সহজ সরল মানুষ।
- হজ সরল মানুষ কোথাই কি বলতে হয় সেটা না জেনে সহজে বলে ফেলে।
- কাউকে কষ্ট না দিয়ে কথা বলার চেষ্টা যারা সর্বদা করে থাকেন, তারা সহজ সরল মানুষ।
- এরা খুবই সৎ হয় এবং সৎচরিত্রবান হয়ে থাকে।
- এরা অল্পতে সন্তুষ্ট থাকে।
- সহজে অন্যের দুঃখে দুঃখী হয় এবং অন্যের দুঃখকে নিজের দুঃখ মনে করে সহযোগিতার জন্যে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে।
- নির্লোভী হয়।
- কাউকে ঠকানোর চিন্তা এরা করতে পারেনা।
- অন্য কাউকে গালাগালি করে না।
- সব সময় কথা রক্ষা করে চলার চেষ্টা করে।
- অল্পতে ভুল স্বীকার করে।
- অন্যের ভুল সহজে ক্ষমা করতে জানে।
- নিঃস্বার্থ ভাবে মানুষকে উপকার করে ভালোবাসে ও সহায়তা করে।
মূর্খ মানুষ চেনার উপায়
- এরা সব সময় পরাজয় স্বীকার করে না
- নিজেকে সর্বদা বড় ভাবে
- অপর কেউ সন্মান জানানোকে মনে করেন দুর্বলতা
- সব সময় অহংকার করে কথা বলে
- সবাইকে ছোট মনে করে নিজেকে ছাড়া
- নিজের স্বার্থ আগে দেখে
- কথায় কথায় মানুষকে আঘাত করে
- নিজেকে সর্বদা বুদ্ধিমান মনে করে
- সব বিষয়ে নিজেকে সেরা মনে করে থাকে
চালাক মানুষ চেনার উপায়
মনে রাখবেন চালাক মানুষেরা সহজে তর্কে জড়ান না। মানুষের যখন পাল্লা ভারী হয় সে সেদিকে মুভ করে। বিষয়ে করে মেজরিটি পার্সন যেখানে সেখানে তিনি পাল্লা ভারী করে।
তবে নিজের চিন্তা যেমন রাখে তারা অন্য কারো ক্ষতি না হয় মত বুদ্ধি রেখে চলে . কেউ আছে নিজে খেলে ঠিক অন্যকেউ না পেলেও তার কিছু এসে যায় না এমন চালাক মানুষগুলি বেশিরভাগ স্বার্থান্বেষী হয়ে থাকেন।
কিছু চালাক মানুষ আছে যারা পরের ক্ষতি করে না তবে নিজে গায়ে পড়ে পরের উপকার করতে যায় না। আমি মনে করি এই সমস্ত চালাক মানুষ খুবই ভালো। অন্যকে ঠকিয়ে নিজে জিতার মধ্যে কোন চালাকি নেই সেটা যারা ভালো করে জানে বুজে তারা আসলেই হলো সত্যিকারের চালাক মানুষ।
সত্যিকারের চালাক মানুষের কিছু লক্ষণ
- এরা সহজে কারো সাথে বিবাদে জড়ায় না।
- কারো ক্ষতি চিন্তা করে না।
- নিজে গিয়ে ওপরের উপকার করে না যতক্ষণ পর্যন্ত বিপদগ্রস্থ ব্যক্তি নিজে গিয়ে না বলে।
- এরা কাজে বেশি থাকে কথায় কম।
- যার কাছে কিছু শিখতে পারবে বা যার কাজ থেকে কোন উপকৃত হবেন তার সাথে বেশি বন্ধুত্ব করে থাকে।
হাসি দেখে মানুষ চেনার উপায়
তাই হাসি দেখে মানুষ চেনার উপায় গুলি বলার চেষ্টা করছি। যারা অট্টহাসি দিয়ে হাসে এবং জোরে হাসে তারা খুবই স্বাভিমানী ও বিশ্বাসী হয়ে থাকে এবং তারা এক সময় গিয়ে খুব সাফল্যের শিখরে পৌঁছাতে পারে। আবার যারা হাসার সমস্যা নাক ছিটকে এবং ব্যাঙ্গাত্মক হাসি প্রদান করে তারা খুব অহংকারী হয়।
যারা মন খুলে হাসেন তারা খুব উদার মনোবৃত্তির হয়ে থাকে এবং সাথে পরোপকারী ভাব ও থাকে প্রচুর। তবে ধূর্ত এবং অহংকারী ব্যক্তিগণ সব সময় ঘোড়ার ডাকের মত করে হাসে।
আবার কিছু কিছু মানুষের হাসি খুব শান্ত প্রকৃতির হয়ে থাকে এরা মনের শান্তি টুকু মুখের হাসিতে ফুটিয়ে তুলে। এরা সাধারণত গম্ভীর, শান্ত, ধৈর্যবান, সহনশীল এবং জ্ঞানী হয়ে থাকে। আবার মানসিক দুর্বল হৃদয়ের মানুষেরা থেমে থেমে হেসে থাকে।
অনেক্ষন হাসির কথা শোনার পরে ও যার মুখে হাসি থাকে না হয়ত বা জোর করে একটু মুখের কোণে সেই দেখা যায় তারা খুবই চিন্তিত থাকে সর্বক্ষণ একটা বিশাল বিপর্যয় কাজ করে তাদের মনে। উদার মনোবৃত্তি এবং পরোপকারী ব্যক্তির হাসি সব সময় উচ্চ্ হাসিতে পরিপূর্ণ থাকে।
বুদ্ধিমান মানুষ চেনার উপায়
বুদ্বিমান ব্যক্তিরাও এই রকম সমস্যা থেকে বাঁচার জন্যে ও মানুষ সম্পর্কে ধারনা রাখে। বুদ্বিমান মানুষেরা সব সময় কোন কিছু না জানলে জানার ভান ধরে বসে থাকেনা বা জানি বলে মিথ্যে কথা বলে না। সোজা জানিনা বলে দেবেন কারণ এতে করে তার অজানাকে জানার জন্যে ইচ্ছা থাকে।
বুদ্ধিমান মানুষ সব সময় অন্ধ বিশ্বাসে রাজি হয় না। বিশেষ যুক্তি দিয়ে কোন কিছুকে গ্রহণ করে থাকে নচেৎ অন্য সময় সে ঠকতে পারে এই ভূমিকায়। তবে বুদ্ধিমান ব্যক্তি সব সময় সরল এবং কোমল মতি হয়ে থাকে ছেলে মানুষী স্বভাব ও তাদের মধ্যে বিদ্যমান।
তাদের অন্যতম লক্ষণের মধ্যে আপনি দেখতে পাবেন এরা অন্যকে খুব সহজে সন্মান এবং শ্রদ্বা করে থাকে। বুদ্ধিমান ব্যক্তিরা ভুল করলেও বিচলিত হয় না পরন্তু তারা ভুল থেকে আরো অধিক শিক্ষা লাভ করে থেকে জীবনের জন্যে।
বুদ্ধিমান ব্যক্তি সর্বদা প্রশ্নকর্তার ভূমিকা থাকে বিনয়ের সহিত। তাই জগতে বুদ্ধিমান ব্যক্তিরা সব সময় জয়লাভ করতে পারে অধিক পরিশ্রম না করেও ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url