আঁশযুক্ত খাবার কাকে বলে এবং আঁশযুক্ত খাবার কোন গুলো
যেহেতু এই আঁশযুক্ত খাবার খুবই প্রয়োজন সেহেতু আমরা আজকের আর্টিকেলে আঁশযুক্ত খাবার কোন গুলো, আঁশযুক্ত খাবারের নাম, আঁশযুক্ত খাবার গুরুত্বপূর্ণ কেন, আঁশযুক্ত খাবারের তালিকা, সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবার এবং প্রতিদিন কি পরিমাণ আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করা উচিত এই নিয়ে আমাদের আজকের আর্টিকেল থাকছে প্রিয় পাঠক বন্ধুরা ।
আঁশযুক্ত খাবার কাকে বলে
আঁশযুক্ত খাবার মানে হল ফাইবার জাতীয় খাবার । আঁশযুক্ত বা ফাইবার খাবার হলো সেই সমস্ত খাবার যা মানুষের শরীরের পুষ্টির যোগান দেবে । সাথে শরীরের গ্লোকোজের মাত্রা কমিয়ে আনে, রক্তে কোলেস্টোরলের মাত্রা কম রাখার ক্ষমতা ও ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখার ক্ষমতা এই সমস্ত খাবার কে আঁশযুক্ত খাবার বলে ।
তবে আপনার জানতে হবে যে কোন ধরণের খাবার কে আঁশযুক্ত খাবার বলে । এই আঁশযুক্ত খাবার গুলি কি, তা যদি আপনি না জানেন এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগানদানকারী আঁশযুক্ত খাবার কি না চিনেন তাহলে সেগুলি আপনি নির্বাচন করতে পারবেন না ।
আঁশযুক্ত খাবার কোন গুলো
আঁশযুক্ত খাবার কাকে বলে এতক্ষন আমরা আলোচনা করেছি কিন্তু এখন জানবো আঁশযুক্ত খাবার কোন গুলো বা আঁশযুক্ত খাবারের নাম। এইগুলি জানা থাকলে শরীর সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে।
আঁশযুক্ত খাবারের নাম গুলির মধ্যে সবজি হলো মটরশুঁটি, বরবটি, ফুলকপি, সিম,বেগুন, বাঁধাকপি, পটল, কচু, সজনে, ঢেঁড়স, ডাঁটা, কলার মোচা ।
শাকের মধ্যে হলো মিষ্টি আলু শাক, পুদিনা পাতা, লাউ কুমড়োর আগা, কলমিশাক, পুঁইশাক, ডাঁটাশাক, কচু শাক, মুলাশাক ।
আঁশযুক্ত খাবারের মধ্যে ফল গুলি হলো কালোজাম, কদবেল, পেয়ারা, আমড়া, আতাফল, নারিকেল, পাকা আম, পাকা কাঁঠাল, পাকা টমেটো, গাব, আপেল, কামরাঙ্গা ।
ডালের মধ্যে অনেক বেশি আঁশ পাওয়া যায় যেমন, ছুলা, মটর, খেসারি ও মুগডাল। তাছাড়াও রয়েছে যব,আটা, তিল, ভুট্টা, কাঁচামরিচ ও সরিষা ইত্যাদি ।
উপরোক্ত যা কিছু আঁশযুক্ত খাবারের তালিকা তুলে ধরা হয়েছে সেই সবগুলি কিন্তু আহামরি দাম নই কিন্তু জানা থাকলে বা চেনা থাকলে আপনি খুব সহজে দেহের সুস্থতার জন্যে খাদ্যাভ্যাস গুলি পরিবর্তন করতে পারবেন ।
আরও পড়তে পারেনঃ ড্রাগন ফলের পূষ্টিগুন ও উপকারিতা
আঁশযুক্ত খাবার গুরুত্বপূর্ণ কেন
আঁশযুক্ত খাবার কাকে বলে এই কথা এতক্ষন জেনেছনে এবার আঁশযুক্ত খাবার গুরুত্বপূর্ণ কেন সেই সম্পর্কে জানার চেস্টা করবো । এখানে আঁশযুক্ত খাবার মানে হলো ফাইবার জাতীয় খাবার মানব শরীরের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ কেন এই প্রশ্ন অনেকের মধ্যে রয়েছে । আঁশযুক্ত খাবার আমাদের মানব শরীরের বড় একটি ঝুঁকি থেকে প্রাকৃতিক ভাবে রক্ষা করে ।
কিন্তু এই আঁশযুক্ত বা ফাইবার জাতীয় খাবার কেন গুরুত্বপূর্ণ সেই কথা অনেকে জানেনা। আসলে ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার আমাদের শরীরের অনেক রকম সমস্যা থেকে রক্ষা করে। ঠিক তেমন করে আমরা লিস্ট আকারে বলার চেষ্টা করছি আঁশযুক্ত খাবার গুরুত্বপূর্ণ কেন ।
- আঁশযুক্ত খাবার আমাদের শরীরের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখে বা বৃদ্ধি হতে দেয় না এই কারণে গুরুত্পূর্ণ ।
- বর্তমানে বেশি সমস্যা যেটি আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে দেখা যাচ্ছে যেমন, রক্তে কোলেস্টোরল এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্যে গুরুত্বপূর্ণ ।
- কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করার জন্যে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ।
- শরীরের ওজন কমানোর জন্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
- পরিপাক তন্ত্রের অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যে গুরুত্বপূর্ণ ।
আঁশযুক্ত খাবারের মাছ কি কি
প্রতিদিন আমাদের ভাতের সাথে মাছ তো থাকবেই কারণ আমাদের মাছে ভাতে বাঙ্গালী বলা হয়। কিন্তু আমরা যে পরিমান মাছ খায় তা যদি আমাদের শরীরের উপকারের চেয়ে ক্ষতি সাধন করে তুলে তাহলে সেই সম্পর্কে জেনে রাখা দরকার।
আঁশযুক্ত মাছ সম্পর্কে জানা দরকার কারণ এই সমস্ত মাছগুলি আমাদের শরীরের অনেক উপকার বয়ে আনে। আঁশযুক্ত মাছ গুলি সম্পর্কে আমরা জেনে আসি চলুন ।
- কৈ মাছ
- টেংরা মাছ
- দেশি মাগুর মাছ
- সিঙ্গি মাছ
- ইলিশ মাছ
এই মাছ গুলি হলো আঁশযুক্ত মাছ যা মানব শরীরের জন্যে ভিটামিন এবং শর্করার যোগান দেয় এবং ওজন কমাতে সহায়তা করে। এক কথায় আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে ।
সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবার
সবচেয়ে বেশ আঁশযুক্ত খাবার মানুষের শরীরের খুবই উপকারী এবং সহজে মিশে যায়। কিন্তু এই সব খাবার কোনগুলি এই বিষয়গুলি জানার খুবই দরকার। চলুন তাহলে জেনে আসি কোন খাবার গুলি সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবার ।
পেঁপে, আলু, শসা, বরবটি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, কুমড়ো, লাউ, লাউশাক এইসব খাবার গুলি খুব বেশি পরিমান আঁশ রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্যে খুবই উপকারী এবং এই খাবার গুলি মানব শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে তুলে তাড়াতাড়ি ।
আরও পড়তে পারেনঃ গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কি পিঠে হয়
প্রতিদিন কি পরিমাণ আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করা উচিত
এতক্ষনে আশা করি আঁশযুক্ত খাবার কাকে বলে তা কিন্তু জেনে গেছেন প্রিয় পাঠক বন্ধুরা । প্রতিদিন আমাদের শরীরের ভিটামিনের অভাব পূরণের জন্যে আমরা অনেক কিছু আহার করে থাকি ।
তার মধ্যে মনে রাখতে হবে প্রয়োজনের তুলনায় যদি আমরা ফাইবার জাতীয় খাবার বা আঁশযুক্ত খাবার বেশি খেয়ে ফেলি তাহলে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তাই নিয়ম করে প্রতিদিন কি পরিমান আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করা উচিত সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে ।
আমাদের বয়স অনুযায়ী আমরা নিয়ম করে বা পরিমিত ভাবে আঁশযুক্ত খাবার খেতে পারি। আমরা বয়স অনুযায়ী আঁশযুক্ত খাবারের কথা তুলে ধরছি ।
২ থেকে ৫ বছরের শিশুদের জন্যে ১৫ গ্রাম করে আঁশযুক্ত খাবার
৬ থেকে ১০ বছরের জন্যে ২০ গ্রাম করে দৈনিক আঁশযুক্ত খাবার
১১ থেকে ১৬ বছরের জন্যে ২৫ গ্রাম করে দৈনিক আঁশযুক্ত খাবার
১৭ থেকে তদূর্ধ্ব বয়সের জন্যে ৩০ গ্রাম করে দৈনিক আঁশযুক্ত খাবার
উপরোক্ত যে বয়স অনুযায়ী আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার জন্যে তালিকা দেওয়া হয়েছে এর চেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া শরীরের জন্যে ভালো হবে না ।
তবে নিয়ম করে যদি নির্দিষ্ট পরিমান আঁশযুক্ত খাবার খেতে পারেন তাহলে শরীরের জন্যে খুবই উপকার বয়ে আনবে এবং ভিটামিনের যোগান দিবে। বিশেষ করে যারা ঘন ঘন অসুস্থতায় ভুগেন তাদের ক্ষেত্রে আঁশযুক্ত ফলমূল খাওয়া বেশি জরুরি ।
আঁশযুক্ত খাবারের উপকারিতা
স্বাভাবিক ভাবে আমরা যে সব খাবার খেয়ে থাকি তার মধ্যে আঁশযুক্ত খাবার কি অথবা কোনগুলি বা এইগুলি আমাদের কি উপকার করে অনেকে জানেনা। তাদের জন্যে আমরা পুনরাবৃত্তি করার চেষ্টা করছি আঁশযুক্ত খাবারের উপকারিতা গুলি ।
- যাদের মধ্যে ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে আঁশযুক্ত খাবার খুবই উপকারী।
- রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে এমন মানুষের জন্যে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্যে আঁশযুক্ত খাবার বা ফাইবার যুক্ত খাবার বেশি উপকারী ।
- কোষ্ঠকাঠিন্যে যারা খুবই কষ্ট পাচ্ছেন তাদের ক্ষেত্রে আঁশযুক্ত বা ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার উপকার বয়ে আনে।
- যারা শারীরিক ভাবে দুর্বল এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের জন্যে আঁশযুক্ত খাবার খুবই উপকারী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যে ।
- স্বাস্থ্যকর ওজন বা নির্দিষ্ট ওজন বজায় রাখতে খুবই উপকারী আঁশযুক্ত খাবার ।
আঁশযুক্ত খাবার কাকে বলে এই নিয়ে শেষ ভাষা
আপনার জন্যেঃ সজনে পাতার উপকারিতা
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url