মোবাইলের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং শিশুদের হাতে মোবাইলের অপকারিতা
তারপর ও আজকে আমরা মোবাইলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে কথা বলবো। ভাল মন্দ দুটোই যেহেতু রয়েছে সেহেতু কোনটা আমাদের জীবনে বেশি প্রভাব ফেলছে সেটা নিয়ে আমরা আজকে আলোচনায় থাকবো ।
মোবাইল মানে কি ?
মোবাইল মানে আমাদের ব্যক্তিগত বা সমষ্টিগত প্রয়োজনীয় কথা দূর দূরান্তে মানুষের সাথে আদান প্রদানের একটি মাধ্যম । এখন আমরা আমাদের জীবনে প্রয়োজনীয় কথা বলার বাইরে অপ্রয়োজনীয় কথা বলার চেষ্টা করি ।
তাই প্রথমে বললাম মোবাইল মানে কি দেখলে অনেকে হাসার প্রশ্ন উঠতে পারে। এবার প্রসঙ্গ হচ্ছে মোবাইলের যে মানে সেই মানে আমরা যথাযত ব্যবহার করছি না। প্রসঙ্গ হচ্ছে কোন বস্তু বা বিষয় আমাদের প্রয়োজনীয়তার বাইরে ব্যবহার করি তখন সেটা আমাদের উপকারের চেয়ে অপকার বেশি করে ।
তাই প্রশ্নটা এখানে রেখেছিলাম যে মোবাইল মানে কি ? যদিও এখন মাল্টিমিডিয়া যুক্ত হয়ে আমাদের মূল্যবান সময় হরণ করছে সেই দিকে কারো নজর নেই। চলুন তাহলে আরো একটু গভীরে যাওয়া যাক ধীরে ধীরে। এই মোবাইলের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে ।
মোবাইল ফোনের উপকারিতা
মোবাইলের উপকারিতা ও অপকারিতার মধ্যে আমরা মোবাইল ফোনের উপকারিতা নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করবো। মোবাইলের ব্যবহারে ভাল-মন্দ দিক দুটোই রয়েছে। চলুন আমরা একটু জেনে আসি মোবাইল ফোনের উপকারিতা গুলি কি কি ।
- মোবাইলের উপকারিতা হিসেবে কথা বলা যায় দূর দূরান্তে এমনকি হাজার হাজার মাইল দূরে দেশ হতে বিদেশে ।
- টিভি দেখা যাচ্ছে হাতের নাগালেই ।
- সময় কাটানোর জন্যে গেম খেলতে পারছি ।
- সোশ্যাল মিডিয়াতে সময় কাটানো যাচ্ছে ।
- বিভিন্ন খবর মোবাইলের মাধ্যমে জানতে পারছি ।
- ভিডিও কলের মাধ্যমে একজন আরেকজন কে সরাসরি দেখতে পাচ্ছি ।
- ইন্টারনেট ব্রাউজিং এর মাধ্যমে প্রতিদিন লিখা পড়া এবং অজানা সব তথ্য দেশ বিদেশের খবরাখবর জানতে পারছি ।
- অনলাইনের মাধ্যমে মোবাইল দিয়ে মার্কেটিং করতে পারছি ।
- ভিডিও করলে মাধ্যমে চিকিৎসা নিতে পারছি ।
- মোবাইলের মাধ্যমে রিমোর্ট ওয়ার্কিং করতে পারছি ।
- ভিবিন্ন রকম মোবাইলের মাধ্যমে বার্তা পাঠাতে পারছি ।
- মোবাইল দিয়ে ইনকাম করতে পারছি অনলাইন থেকে ।
মোবাইল ফোনের অপকারিতা
ঠিক একই ভাবে মোবাইলের ক্ষেত্রে ও একই অবস্থা আবার পরিলক্ষিত করা যায়। মোবাইলের শুধু উপকারিতা নই অপকারিতা রয়েছে অনেক । তার মধ্যে শারীরিক এবং মানসিকভাবে দুইদিকে আমাদের অপকারিতা বয়ে আনছে। চলুন শারীরিক ও মানসিক অপকারিতা গুলি দেখে আসি ।
আরও পড়তে পারেনঃ ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা
শারীরিক অপকারিতা
- বেশিক্ষন মোবাইল দেখার কারণে মোবাইলের ক্ষতিকর বেগুনি রশ্মি চোখের দৃষ্টি শক্তির উপর প্রভাব ফেলছে ।
- হেডফোন দিয়ে অনেকে গেম ও ফ্যান শোনার কারণে শ্রবণ শক্তি ক্ষীণ হচ্ছে দিন দিন ।
- রাত জেগে মাল্টিমিডিয়াতে সময় কাটানোর কারণে ঘুমের সমস্যা ও দেখা দিচ্ছে ।
- বেশিরভাগ সময় মোবাইলে কাটানোর কারণে শরীরের স্বাভাবিক গতি হারিয়ে যাচ্ছে ।
- অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারের ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ব্যথার সৃষ্টি হতে পারে।
মানসিক অপকারিতা
- প্রতিদিন ভিবিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার নোটিফিকেশন আপনার মানসিক অপকারিতা স্বরূপ উদ্ভিগ্নতা বৃদ্ধি করবে ।
- মোবাইলের ব্লু লাইট মেলাটোনিন হরমোনের বৃদ্ধিতে বাধাগ্রস্থ করে ।
- অতিরিক্ত মোবাইলের ব্যবহারে মানসিক অবসাদ দেখা দেই ।
- মোবাইলের মাধ্যমে পাওয়া বিভিন্ন ধরণের নেতিবাচক খবর হতাশা গ্রস্থ করে মানসিকভাবে ।
- অতিরিক্ত মোবাইলের ব্যবহারে পড়ালেখায় গণসংযোগ বিচ্ছিন্ন হচ্ছে ।
- বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে পর্ন সাইটগুলি ভেসে আসার কারণে মানসিক সুস্থ চিন্তার মধ্যে ব্যাঘাত ঘঠাচ্ছে ।
- বর্তমানে মোবাইলের ব্যবহারের ফলে অপ্রাপ্ত বয়সের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে অবাধ মেলা-মেশা বৃদ্ধি পেয়েছে যা মনের উপর খুবই ক্ষতিকারক একটি দিক ।
দৈনন্দিন জীবনে মোবাইলের উপকারিতা ও অপকারিতা
দৈনন্দিন জীবনে মোবাইল ব্যবহারে উপকারিতা
যা আগে এক সময় বড়োই দুর্লভ ছিল । এমনকি সমগ্র বিশ্বের খবর এক নিমিষে মোবাইলের মাধ্যমে পেয়ে যাচ্ছেন। এর সাথে সোশ্যাল মিডিয়াগুলি যুক্ত হওয়াতে একে ওপরের সাথে যোগযোগ এবং দৈনন্দিনের খবর পাচ্ছেন ।
মাল্টিমিডিয়ার অনেক কিছু শেয়ার করতে পারছেন। প্রতিদিনের পড়ালেখার খবর বা ক্লাসের পড়ালেখার খবর আদান প্রদান করতে পারছেন নিমিষেই। বিভিন ব্যবসা পরিচালনা করতে পারছেন সোশ্যাল মিডিয়া সব আরো অন্যান্য প্লাটফর্ম গুলির মাধ্যমে ।
সেটা দেশ হতে বিদেশে পর্যন্ত। বিভিন্ন জনের ভাল মন্দ খবর নিমিষেই হাতের মধ্যে পেয়ে যাচ্ছেন অনলাইনে। সারা বিশ্বের আলোচিত সব খবর এখন আরো কোথাও গিয়ে শুনতে হচ্ছেনা। আপনার মোবাইলের মাধ্যমে জেনে যাচ্ছেন ।
আরও পড়তে পারেনঃ আক্কেল দাঁতের ইনফেকশন
দৈনন্দিন জীবনে মোবাইল ব্যবহারে অপকারিতা
দৈনন্দিন জীবনে মোবাইল আমাদের এমন একটা অবস্থায় নিয়ে এসেছে উপকারিতা থেকে উপকারের দিকে বেশি নিয়ে যাচ্ছেন। বেশিক্ষন মোবাইলের মধ্যে আসক্ত হওয়ায় আমাদের যে প্রধান কাজ সেই কাজ থেকেই আমরা সরে যাচ্ছি ।
মনে রাখতে হবে মোবাইল আমার প্রয়োজনে। মোবাইল আমার জীবনের জন্যে। মোবাইলের জন্যে আমার জীবন নই। কিন্তু আমাদের সেই দশায় ঘটছে যে মোবাইলের জন্যে আমার জীবন হয়ে গেছে ।
ছোট্ট শিশুদের মধ্যে আপনি এই আসক্তি এখন বেশি দেখবেন। প্রায় সময় খবর পাওয়া যায় যে মোবাইলের জন্যে পিতা মাতার সাথে সন্তানের মতের অমিল হচ্ছে যার কারণে আত্মহত্যার পথ বেঁচে নিয়েছেন ।
আবার অনেকে দেখবেন এই মোবাইল পেয়ে অকালে কত মেয়ের ফাঁদে এবং আরো কত রকমের ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছে। মোবাইলের অপকারিতা স্বরূপ বিশেষ করে ছোট্ট শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যাচ্ছেন ।
কোন কিছু খাবার হাওয়া যাচ্ছেনা শুধু মাত্র মোবাইলের বায়না পূরণ না করলে। আবার অনেক ছোট কিশোরী মোবাইলের ফাঁদে পড়ে জীবন উৎচ্ছন্ন যাচ্ছেন। শুধু কিশোরী নোই কিশোর ও বাদ যাচ্ছেনা ।
দৈনন্দিন জীবনে মোবাইল আমাদের অনেক অপকারিতার মধ্যে বিশেষ করে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে মেয়েরা অবাধ মেলামেশা। তার সাথে সোশাল মিডিয়া গুলির আনাগুনার ফলে অনেকে পরকীয়ার জড়িয়েছেন । অপকারিতার কথা বললে শেষ হওয়ার নই ।
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের উপকারিতা
বর্তমানে একবিংশ শতাব্দীতে আপনি বিচার করলে দেখতে পাবেন প্রায় ছাত্রদের মধ্যে আপনি একটি মোবাইল নই শুধু স্মার্ট মোবাইল পাবেন যার মাধ্যমে তার ঘরে বসেই নিজের পড়ালেখা করছেন ভিবিন্ন ভাল মানের টিচারদের টিউশন নিয়ে ।
মোবাইলের উপকারিতা রয়েছে অনেক ছাত্র জীবনে। তারমধ্যে পড়ালেখার অনেক উন্নতি সাধন হয়েছে। এই যে গেল করোনা কালে অনেক ছাত্র গৃহবন্ধী অবস্থায় মোবাইলের মাধ্যমে পড়ালেখার খবরাখবর নিয়েছেন টিউশন নিয়েছেন ।
যা ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের উপকারিতার মধ্যে অন্যতম। এবং তাছাড়াও অনেকে বিদেশে উন্নত পড়ালেখার জন্যে খবর সংগ্রহ করেছেন এই মোবাইলের মাধ্যমে। তাই এই মোবাইল ফোনের উপকারিতা ছাত্র জীবনে অনস্বীকার্য ।
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা
তারমধ্যে রয়েছে, ভিবিন্ন নেশা আদান প্রদানের বার্তা এখন মোবাইলের মাধ্যমে হয়ে যায়। আবার অনেকে অবাধ মোবাইলের ব্যবহারের ফলে যৌনাচারে লিপ্ত হচ্ছে। আবার অনেকে বিভিন্ন রকমের ক্রাইমের সাথে যুক্ত হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ার বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ সহজ হওয়ার ফলে ।
আবার অনেকে পড়ালেখার পাশে সোশ্যাল মিডিয়াতে উস্কানিমূলক কথাবার্তার মাধ্যমে বিবাদে জড়াচ্ছেন এতে পরে পরিণয় স্বরূপ মৃত্যু পর্যন্ত ডেকে আনছেন। অনেক মেয়ে এই মোবাইলের অপব্যবহারের ফলে ফাঁদে পড়ছেন ছাত্রজীবনে।
অনেক কিছুই এই ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা সম্পর্কে বলা যায়। মধ্য কথা হচ্ছে সব বিষয় আমরা ভালোর জন্যে গ্রহণ করি কিন্তু সুচিন্তার অভাবে এবং সৎব্যবহারের অভাবে অপকারিতা ডেকে আনছি ।
শিশুদের হাতে মোবাইলের অপকারিতা
শিশুদের মধ্যে এখন এই প্রবণতা এটি বেশি যে তা লাগাম দেয়া যাচ্ছে না। অনেক মা-বাবা তাদের কোমল মতি শিশুর জন্যে এই চিন্তায় অনেক কষ্ট পাচ্ছেন। অনেক শিশু পড়ালেখায় করতে চাই না শুধু মোবাইলের জন্যে ।
এটি একটি ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে দীর্ঘদিনের জন্যে। অনেক শিশুকে দেখা যায় মোবাইল দিয়ে ভাত খাওয়াতে হয়। আবার অনেকে তো গড়াগড়ি দিচ্ছেন মেজেতে। এই মোবাইল কোমল শিশুদের মস্তিষ্কে প্রভাবে ফেলছে ।
এতে করে শিশুরা ঘুমালে সেই স্বপ্নগুলি মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। এতে করে স্মৃতিশক্তি নষ্ট হচ্ছে। তাছাড়াও শিশুদের হাতে মোবাইলের অপকারিতা স্বরূপ ঘুমের ব্যাঘাত হচ্ছে। বিভিন্ন রকম ভিডিও ডেকে মনের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে ।
যা ভবিষ্যৎ জীবনের জন্যে একটি দুশ্চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। একজন সুস্থ মানসিকতার মানুষ হিসেবে গড়ে তুলার ক্ষেত্রে সার্বিকভাবে শিশুদের হাতে মোবাইল খুবই উপকার বয়ে আনছে ।
মোবাইলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে শেষ কথা
আপনার জন্যেঃ ফেইসবুক আইডি যে সব কারনে রেস্ট্রিক্টেড হয়
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url