ম্যাচুরিটি হওয়ার উপায় এবং পরিপক্কতা কাকে বলে
সূচীপত্রঃম্যাচুরিটি হওয়ার উপায়-সবাই খুব তাড়াতাড়ি পূর্ণতা পাওয়ার জন্যে ব্যাকুল। কারণ পূর্ণতা এলে মানুষের জীবনে অনেক না পাওয়া কিছু পাওয়া যায়। তাছাড়াও অনেক বিষয় রয়েছে এই ম্যাচুরিটি হওয়ার পর। সেই বিষয়গুলি নিয়ে আজকে কথা বলব সবিস্তারে ।
সাথে থাকছে ম্যাচুরিটি আসলে কি বা ম্যাচুরিটি অর্থ কি ? ম্যাচুরিটি বাড়ানোর উপায়? কিভাবে বুঝব যে আমি ম্যাচুরিটি হয়েছি ? পরিপক্কতা কাকে বলে? পরিপক্ক আচরনের বৈশিষ্ট কয়টি ? ম্যাচুরিটি কাকে বলে ? ম্যাচুরিটি মানুষ বোঝার উপায় ? উপস্থিত বুদ্ধি বাড়ানোর উপায় এই সবই কিছু অজানা কথা আজকে বলার চেষ্টা করবো। সাথেই থাকবেন বন্ধুরা ।
ম্যাচুরিটি কাকে বলে ? ম্যাচুরিটি আসলে কি বা ম্যাচুরিটি অর্থ কি ?
ম্যাচুরিটি শব্দটা আসলে মানুষের মনের মনুষ্যত্ব বোধ তৈরী হওয়াকে বুঝায় । তাছাড়াও অন্য রকম সংজ্ঞা দেওয়া যেতে পারে । একেক জনের কাছে একেক রকম এই ম্যাচুরিটি শব্দটা ।
মানুষের ভাল মন্দ বুঝার মত ক্ষমতা হলেই ম্যাচুরিটি বুঝা যায়। তার সাথে মন্দ কিছু ত্যাগ করা এবং তার সাথে ভাল কিছুর জন্যে সিদ্বান্ত নেওয়ার ক্ষমতাকে ও বুঝায় ।
আরো কিছু সিদ্বান্তে উপনীত হয় যায় যেমন, আবেগ আর বিবেকের মধ্যে যখন পার্থক্য সহজে বুঝতে পারবে তখন তুমি ম্যাচুরিটি অর্থ আসলেই বুজতে পারবে বা এটাকেই ম্যাচুরিটি বলে ।
ম্যাচিউরিটি বাড়ানোর উপায় ?
ম্যাচুরিটি বাড়ানোর উপায় হলো নিজেকে বিচার করা । নিজের দোষগুলি আগে খুঁজে খুঁজে বের করুন তাহলে আপনার অনেক সমস্যার সমাধান আপনি নিজেই খুঁজে বের করতে পারবেন।
সেক্ষেত্রে নিজের সমালোচনা করতে পারাটাও ম্যাচুরিটি মধ্যে পড়ে। কিছু বিষয় বলার চেষ্টা করবো ম্যাচুরিটি বাড়ানোর সম্পর্কে ।
- ম্যাচুরিটি বাড়াতে প্রতিদিন বই পড়তে পারেন ।
- ভাল মনের অধীকারী মানুষের সাথে সঙ্গ করতে পারেন ।
- বুদ্ধি বৃদ্ধি হয় এমন সব গেম খেলতে পারেন ।
- মেডিটেশন করতে পারেন নিত্যদিন অন্তত ১৫ থেকে ৩০ মিনিট ।
- প্রতিদিন যোগাসন করতে পারেন এতে করে শরীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং ম্যাচুরিটি হওয়ার উপায় হিসেবে ভাল কাজে আসবে ।
কিভাবে বুঝব যে আমি ম্যাচিউরড হয়েছি ?
যখন দেখবেন অন্যকেউ দোষ করলেও খুব সহজে আপনি ক্ষমা করতে পারছেন। এবং আপনি অন্যকারো দোষ দেখার চেয়ে গুন্ ভাল দেখছেন তখন মনে করবেন আপনার ভিতর ম্যাচুরিটি এসে গেছে ।
তাছাড়াও আরো অনেক কারণ আছে যেমন , কারো দোষ দেখার চেয়ে কেন দোষ করেছে সেটা পুঙ্কানুপুঙ্খ বিচার করতে পারছেন তাহলেও ম্যাচুরিটি হয়েছে সেটা বুঝতে পারবেন ।
অন্য কারো খুশি দেখে ঈর্ষান্বিত না হয়ে যখন আপনি নিজে ও খুশি হবেন আপনার মন ও খুশিতে ভোরে উঠছে তখন মনে করবেন আপনি ম্যাচিউরড হয়েছেন ।
যখন পরিবারের কারো দুঃখে আপনার মন কেঁদে উঠছে এবং তার দুঃখকে নিজের মনে করে আপনার তার সমাধান খোঁজেন তখন মনে করবেন আপনার ভিতর ম্যাচুরিটি এসেছে ।
সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনি যখন কোন স্ট্যাটাস দেন তখন কারো মনে আঘাত না লাগে মত চিন্তা করে যে স্ট্যাটাস পোস্ট করেন সেটাও কিন্তু ম্যাচুরিটির মধ্যে পড়ে ।
পরিপক্কতা কাকে বলে
আপনার জীবনের ঘটে যাওয়া বিষয়গুলির উপযুক্ত এবং যতাযত ভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করাকে পরিপক্কতা বলে। মনোবিজ্ঞানের ভাষায় এই ভাবকে পরিপক্কতা বলে। পরিপক্কতার মধ্যে যতাযত এবং উপযুক্ত বিষয় গুলি বেশি পরিলক্ষিত হয় ।
এটি জ্ঞানের একটি অবস্থা। জ্ঞান বা প্রজ্ঞার পরিধি যত বেশি বৃদ্ধি পাবে সে ততবেশি পরিপক্ক। এটি সহজাত প্রবৃত্তি নয়। এটি নিজের বিবেকবোধ এবং চেতনা দিয়ে পরিপক্কতা লাভ করতে হয় ।
পরিপক্কতা এবং ম্যাচুরিটি এই দুইটি একই বৃক্ষের দুইটি ফল। যা একটি আধা পাকা আরেকটি হলো সম্পূর্ণ পাকা। নিজের জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে এটি প্রকাশ পায়। এই পরিপক্কতার মাঝে পরমশান্তি লুকিয়ে রয়েছে ।
পরিপক্ক আচরনের বৈশিষ্ট কয়টি
পরিপক্কতা বিষয়টি আসলে জ্ঞানের পরিধির উপর নির্ভর করে হয়ে থাকে। আর জ্ঞানের যেহেতু কোন নির্দিষ্ট সীমানা নেই সেহেতু আপনাকে একটা নির্দিষ্ট বেইজে পরিণত হতে হবে।
পরিপক্ক আচরণের কয়টি বৈশিষ্ট এটি নির্দিষ্ঠ করে বলা খুব একটা সহজ নই। তবে পরিপক্ক আচরণের কয়েকটি বৈশিষ্ঠ আপনাদের কাছে পেশ করার চিন্তা করছি। আশা করি আপনাদের মনের দ্বন্ধ দূর হয়ে যাবে বলে আমার মনের বিশ্বাস।
যখন আপনার মা-বাবা আপনার জন্যে কোন দুশ্চিন্তা করবে না বা আপনি আপনার মা-বাবার কোন দুশ্চিন্তার কারণ হবেন না মনে করবেন তখন আপনার পরিপক্কতা এসেছে।
যখন আপনার চোখের সামনে কোন অসহায় দরিদ্র মানুষ কষ্টে জর্জরিত হয়েছে তখন আপনার বিবেক দুঃখের অনলে পুড়ছে তখন মনে করবেন আপনার পরিপক্কতা এসেছে বা পরিপক্ক লাভ করেছেন।
যখন অপরের সুখের জন্যে নিজের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে ত্যাগের মহিমায় হৃদয় উৎফুল হয়েছে তখন মনে করবেন আপনার ভিতরে পরিপক্কতা এসেছে।
যখন একটি ক্ষুদ্র জীবের দুঃখ দেখেও আপনার মন কেঁদে উঠছেন তখন মনে করবেন আপনার পরিপক্কতা লাভ হয়েছে।
কারো দোষ সহজে ক্ষমা করতে পারছেন তখনি আপনার পরিপক্কতা লাভ হয়েছে।
নিজে ইচ্ছাকৃত হেরে গিয়ে অপরকে জিতিয়ে দেওয়ার মানসিকতা যেদিন হবে সেদিন আপনার ভিতরে পরিপক্কতা এসেছে। কারণ অন্যকে জিতিয়ে দিয়ে নিজে হারিয়ে যাওয়ার মধ্যে মানুষ অপার আনন্দ লাভ করতে পারে।
যে পরিপক্ক সে সব সময় পরিপক্কতার মাধ্যমে নিজের আনন্দ খুঁজে পাই। কারণ পরিপক্কতা এটি একটি জ্ঞানের অবস্থা। মনে রাখবেন যার ভিতর জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে সে সর্বদা ওপরের শান্তির মাঝে নিজেকে খুঁজে পাই।
পরিপক্কতার সংজ্ঞা অনেকে অনেক রকম ভাবে দিয়ে থাকে । আমার ব্যক্তিগত সত্ত্ব থেকে আজকের এই পরিপক্কতা সম্পর্কে বৈশিষ্ট্যগুলি তুলে ধরলাম। এই তথ্য আপনার খুব ভাল লাগবে বলে আমাদের মনের অতুলনীয় শান্তি থেকে বলা যায় । আসলে আমার মতে পরিপক্কতা হলো এই ।
ম্যাচুরিটি মানুষ বোঝার উপায়
- ম্যাচুরিটি হলে অপরের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করে না ।
- কাউকে সংশোধনের জন্যে কিছু বলার চেষ্টা করলে তা মানুষের সামনে না বলে গোপনে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করবেন যাতে করে তার মান ক্ষুন্ন না হয় ।
- কারো সমালোচনা থেকে নিজেকে আড়াল করবেন ।
- নিজের সমালোচনা কেউ করলেও তা কাজের মাধ্যমে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন ।
- সরাসরি কাউকে কথার মাধ্যমে আঘাত না দিয়ে তাকে সংশোধনের পথ খুজেঁ ।
- ম্যাচুরিটি আসলে এমন মানুষের মধ্যে হতাশা থাকলেও কাউকে সহজে সেটা বুজতে দেয় না ।
- শত্রুদের সাথেও মিষ্টভাষী হয়ে থাকে ।
- কথা বলার আগে সেই কথার আগে পিছে চিন্তা করে কথা বলেন ।
উপস্থিত বুদ্ধি বাড়ানোর উপায়
উপস্থিত বুদ্ধি বিষয়টি ম্যাচুরিটির সাথে সম্পর্কিত একটি বিষয়। যদিও ভদ্রতা এবং নম্রতা ও এদের শ্রেণীতে রয়েছে। উপস্থিত বুদ্ধি আসলে কেউ কাউকে দিতে পারেন না। এটি সম্পূর্ণ নিজের ক্ষমতার উপর নির্ভরশীল। নিজের জ্ঞান চর্চার একটি ধাপ ।
তবে প্রাকৃতিক ভাবে কিছু উপায় আছে উপস্থিত বুদ্ধি বাড়ানোর জন্যে। সেটি জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে আবার কিছু রয়েছে প্রাকৃতিক গুন্ সম্পন্ন আহারের মধ্যে।
জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে হলো
- বিভিন্ন রাইটারের বই পড়ার মাধ্যমে
- বিভিন্ন মানুষের সাথে কথা বলা বা জ্ঞানের উৎস হিসেবে প্রশ্ন করা।
- মেডিটেশন করার মাধ্যমে।
- শারীরিক ব্যায়াম করার মাধ্যমে।
- একান্ত নিজের মধ্যে প্রশ্নের উৎপত্তি করা এবং সেটির সমাধান খুঁজে বের করার আপ্রাণ চেষ্টা।
প্রাকৃতিক মাধ্যম
- প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া
- সামুদ্রিক মাছ খাওয়া
- পর্যাপ্ত পরিমান ঘুম যাওয়া
- মাছের তেল খাওয়া
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url