দক্ষিণ কোরিয়া টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার নিয়ম এবং দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা করতে কি কি লাগে

দক্ষিণ কোরিয়া টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার নিয়ম
দক্ষিণ কোরিয়া টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার নিয়ম । দক্ষিণ কোরিয়া সারা বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের মধ্যে একটি । এই দক্ষিণ কোরিয়া প্রযুক্তির দিকে অনেক এগিয়ে রয়েছে । তাদের পর্যটন খাত ও অনেকে এগিয়ে । এই দেশে খুবই নির্ভয়ে এবং নিশ্চিন্তে টুরিস্টরা ঘুরে বেড়াই । 

সূচীপত্রঃতাই এই দক্ষিণ কোরিয়ার যাওয়ার জন্যে অনেকের বাসনা থাকে । তাই আজকে এই আর্টিকেলে দক্ষিণ কোরিয়া টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বলার চেষ্টা করবো গভীর আলোচনার মাধ্যমে । 

দক্ষিণ কোরিয়া বিজনেজ  ভিসা 

দক্ষিণ কোরিয়া অনেক প্রকার ভিসার মধ্যে বিজনেজ ভিসা সম্পর্কে ও অনেকে জানার ইচ্ছে রাখেন । তাই দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসা পেতে হলে লটারির মাধ্যমে পেতে হয় । কিন্তু বিজনেজ ভিসার ক্ষেত্রে একটু ভিন্নতা রয়েছে অবশ্যই । 

এই দক্ষিণ কোরিয়া বিজনেজ ভিসা দুই ভাবে হয়ে থাকে একটি হলো ৩ মাসের জন্যে। আরেকটি হলো ৩ মাসের বেশি। এই দুই পর্যায়ে বিজনেজ ভিসা আপনি পেতে পারেন । তবে আপনি দক্ষিণ কোরিয়া বিজনেজ করার জন্যে যদি ৫ লক্ষ ডলার যদি বিনিয়োগ করেন তাহলে খুবই কষ্ট ছাড়া আপনি বিজনেজ ভিসা পেয়ে যাবেন। 

তবে হ্যা সেই ক্ষেত্রে আপনার বিজনেজের প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র গুলি জমা করতে হবে। আপনাকে আর কোন লটারি পাওয়ার জন্যে বসে থাকতে বা অপেক্ষা করতে হবে না। তবে বাংলাদেশের অনেক মানুষ এই দক্ষিণ কোরিয়া বিজনেজ ভিসা পেয়েছে এবং বিজনেজ রয়েছে অনেকের দক্ষিণ কোরিয়ায় । 

দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসা 

দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসার মধ্যে বেশি চাহিদার ভিসা হলো স্টুডেন্ট ভিসা। এই স্টুডেন্ট ভিসার জন্যে অনেকেই চেষ্টা করছে দক্ষিণকোরিয়া পড়ালেখার জন্যে। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসা পেতে হলে অনেক সমস্যার বেগ পেতে হয় । 

তারমধ্যে হলো প্রথমে আপনাকে IELTS থেকে ৫.৫ থেকে ৬ পর্যন্ত পয়েন্ট পেতে হবে যদি আপনি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে স্কলারশিপ পেতে চান। তাও পুরোপুরি নয় ৭০ থেকে ৭৫% পর্যন্ত সুযোগ থাকবে । 

এরপর ব্যাংক একাউন্ট দেখাতে হবে সেভিং একাউন্ট প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা । যা ৩ মাস পর্যন্ত ব্যাংকে ম্যাচুরিটি হয়েছে সেই রকম। তার সাথে আরো কাগজ পত্র তো রয়েছে তার সাথে আপনাকে দেখাতে হবে সার্টিফিকেট এবং যেকোন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ভর্তির অফার লেটার । 
 
আপনাকে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে হলে ভাষার দক্ষতা থাকা জরুরি হয়ে পড়ে । এর সাথে দক্ষিণ কোরিয়ার স্টুডেন্ট ভিসায় যাওয়ার আগেও কিছু রেস্টিক্টেট বিশয় জেনে রাখা জরুরি । আপনি চাইলেও সপ্তাহে ২০ ঘন্টার উপরে কাজ করতে পারবেন না । হ্যা তবে ভেকেশনে একটু বাড়তি কাজ করতে পারবেন এবং অনেক বাংলাদেশিরা এই রকম করে থাকে । 

দক্ষিণ কোরিয়া টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার নিয়ম

দক্ষিণ কোরিয়া টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে তেমন বেশি জটিলতা নেই । তবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সমূহ জমা করলেই আপনি টুরিস্ট ভিসা সহজে পেয়ে যাবেন। এশিয়ার ভিতরে হওয়ায় বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার যাওয়ার ভাড়াও বেশি নয় । 


টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে। শারীরিক ফিটনেস রিপোর্ট দেখতে হবে। আবাসনের ঠিকানা দেখতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস। টুরিস্ট ভিসা ৯০ দিনের জন্যে হয়ে থাকে এবং কিছু ক্ষেত্রে ৯০ দিনের বেশি ও হয়ে থাকে। তবে অনেকে টুরিস্ট ভিসায় গিয়ে কাজ করছে এবং উপার্জন ও করছে । 


আরও পড়ুনঃ সিঙ্গাপুর ইলেকট্রিশিয়ান বেতন কত 

দক্ষিণ কোরিয়া টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার জন্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র 

  • দক্ষিণ কোরিয়া টুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলি দরকার তার সম্পর্কে নিচে দেওয়া হলো আপনাদের সুবিদার্থে।  
  • বৈধ পাসপোর্ট অন্তত ৩০ দিন মেয়াদ আছে এমন 
  • ভোটার আইডি কার্ড এর মূল কপি 
  • সদ্য তুলা সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড যুক্ত পাসপোর্ট সাইজ ছবি
  • সঠিক তারিখ সহ ভিসার আবেদন পত্র 
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর মূল কপি 
  • জন্ম নিবন্ধন এর মূল কপি
  • দক্ষিণ কোরিয়া থেকে প্রাপ্ত মেডিকেল রিপোর্ট 
  • দক্ষিন কোরিয়ার ভবিষ্যৎ আবাসনের বিবরণ 

দক্ষিণ কোরিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

দক্ষিন কোরিয়া অনেকের কাজের জন্যে এবং ভালো বেতনের আশায় পাড়ি জমাতে চাই। দক্ষিণ কোরিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বিশেষ করে ২ বছরের হয়ে থাকে। ভাল বেতনের চাকরি করা যায় । 

দক্ষিণ কোরিয়া ওয়ার্ক ভিসায় গেলে ইউরুপ এবং আমেরিকার মত সুযোগ সুবিধা রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে গেলে কোন অংশে এশিয়ার দেশ বলে ছোট মনে হওয়ার বা সুযোগ সুবিধা কম হবে বলে মনে করার কিছু নেই ।

আপনি বাড়তি কাজ করে ওভার টাইম করলে কয়েক লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এবং ২ বছরের ভিসা হলেও আরো এক বছরের এক্সটেনশন করিয়ে নিতে পারবেন। তবে জেনে রাখা ভাল যে দক্ষিণ কোরিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যদি আপনি যেতে চান তাহলে সরকারিভাবে যেতে হবে । 

সরকারি লটারির মাধ্যমে যেতে হবে । কয়েকটি মাধ্যম পার করে রোয়েসেলের মাধ্যমে যেতে পারবেন। সব ঠিকঠাক থাকলে আপনি একটি ভাল বেতন এবং ভালো সুবিধা ভোগ করতে পারবেন দক্ষিণ কোরিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে। 

তবে দক্ষিণ কোরিয়া একটি ভিসা চালু করেছে যার নাম হচ্ছে নোম্যাড ভিসা। এই ভিসার কাজ হচ্ছে রিমোট জবের মত। দূর থেকে কাজ করার জন্যে এই ভিসার চালু করেছে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার ।

দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা করতে কি কি লাগে

দক্ষিণ কোরিয়া অনেক ভিসা রয়েছে তার মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া টুরিস্ট ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, কৃষি কাজের ভিসা, প্রবাসী কর্মকর্তা ভিসা, ফ্যামিলি ভিসা, সাধারণ ভিসা এবং সামাজিক কর্মকর্তার ভিসা ও পাওয়া যায়। কিন্তুএকেক ভিসার ক্ষেত্রে একেক ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হয়। আমরা চেষ্টা করবো সবার জন্যে যেই কাগজপত্র সচরাচর লাগে সেগুলি সম্পর্কে তুলে ধরার । 

দক্ষিণ কোরিয়া টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার নিয়ম
  • বৈধ পাসপোর্ট (অন্তত ৩ মাস মেয়াদ আছে )
  • জাতীয় পরিচয় পত্র 
  • ভিসা প্রসেসিং ফি 
  • ভিসা আবেদন ফি 
  • ভিসা আবেদন ফর্ম
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স কপি 
  • মেডিকেল ফিটনেস সার্টিফিকেট
  • বয়স সীমা ১৮ - ৩৯ বছর হতে হবে ( ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রে )
  • কোরিয়ান ভাষায় দক্ষতার সার্টিফিকেট ( ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রে )
  • এস এস সি সার্টিফিকেট ( ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রে )
  • কাজের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট ( ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রে )
  • কাজ জানার সার্টিফিকেট বা স্কিল সার্টিফিকেট ( ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রে )
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট (স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে )
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট (স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে )
  • কোরিয়ান কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অফার লেটার (স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে )
  • কোরিয়ান ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট (স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে )
  • নিজ দেশের স্থায়ী চাকরিরত থাকলে ছুটির সার্টিফিকেট (টুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে )
  • আর্থিক সাপোর্টের প্রমান (টুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে )
আরও পড়তে পারেনঃ দুবাই জব ফর বংলাদেশী

দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা অনলাইন আবেদন করার নিয়ম

দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার জন্যে অনলাইনে আপনি আবেদন করার নিয়ম রয়েছে কিছু। কারণ দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার EPS এর ই-৯ ভিসার এর আওতায় শিল্পখাতে আগ্রহী প্রার্থীদের চাকরিতে নিয়োগের লক্ষ্যে কোরিয়ান ভিসার চালু করেছেন। 


তবে ভাষা জানা জরুরি। দক্ষিণ কোরিয়া আপনি ও যেতে পারবেন সরকারি ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। eps.bosel.gov.bd এই ওয়েবসাইট গুগল এ গিয়ে সার্চ করুন।


এই নাম দিয়ে সার্চ করলে ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে পারবেন। ক্যাটাগরি রয়েছে আপনি যে ক্যাটাগরীতে যেতে চান সেটা সিলেক্ট করুন। এবং প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র স্ক্যান করে জমা করুন এবং আবেদন ফি জমা করুন। 


কিছু দিনের মধ্যে আপনার সব গুলি তথ্য আপনার ইমেইলের মাধ্যমে আপনাকে জানিয়ে দিবে। আবার অফলাইনেও আপনি চাইলে দক্ষিণ কোরিয়া ভিসার জন্যে আবেদন করতে পারবেন। 


কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনাকে বাংলাদেশে নিয়োজিত দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাসে যোগাযোগ করতে পারবেন। এবং আপনার দরকারি কাগজপত্র জমা করার পর আবেদন ফর্ম সহকারে সম্পন্ন হয়ে গেলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আপনি ভিসা রেডি হয়ে যাবে ।

দক্ষিণ কোরিয়া টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার নিয়ম নিয়ে শেষ কথা 

অনেক্ষন ধরে দক্ষিণ কোরিয়ার সমস্ত ভিসা নিয়ে কথা বলেছি এবং চেষ্টা করেছি কিছু তথ্য দেওয়ার জন্যে । আশা করি তেমন কিছু এই দক্ষিণ কোরিয়ার টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানার নেই। তবে আপনার দরকারি এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে খুবই সহজে দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসা আপনারা পেয়ে যাবেন । 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪