চুলের যত্নে পেয়ারা পাতার ব্যবহার এবং পেয়ারা পাতার ব্যবহার দিয়ে রূপচর্চা
নতুন চুল গজাতে পেয়ারা পাতার ব্যবহার
চুল পড়ার ভয় আমাদের মধ্যে হর হামিষা দেখা যায় । অকালে চুল ঝরে যাওয়া যে কত বেদনার তা কিন্তু যে চুল হারিয়েছে সেই জানে। যদিও অনেকের মধ্যে শুনলে অবাক হবেন যে পেয়ারা পাতা মানুষের কত উপকারী একটি জিনিস এই চুলের ক্ষেত্রে ।
নতুন চুল গজাতে পেয়ারা পাতার ব্যবহার যদি আপনি সঠিকভাবে করতে জানেন তাহলে আর ভয় হবে নাই। নতুন চুল গজানোর জন্যে এবং চুল ঝরে পড়ার সমস্যা থেকে ও এই পেয়ারা পাতা খুবই উপকারী একটি উপাদান ।
প্রথমে আপনি ৫ কিংবা ৬ টা একদম সবুজ পেয়ারা পাতা নিয়ে ৪ বা ৫ কাপ পানি নিয়ে একটি পরিষ্কার পাত্রে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত সিদ্ধ করে নিন। এর পর এই গরম পানির সাথে ৩ কাপ ঠান্ডা পানি মিশিয়ে নিন ।
তারপর আপনি এই পানি আপনার মাথার স্কাল্পে ঘণ্টা ব্যাপী লাগিয়ে রাখুন। দেখবেন ভাল ফল পাচ্ছেন। এতে করে আপনার চুল ঝরে পড়া থেকে মুক্তি পাবেন আবার নতুন চুল গজাতে ও সহযোগিতা ও করবে এই পেয়ারা পাতা ।
চুলের জন্য পেয়ারা পাতার উপকারিতা
পেয়ারা পাতার মধ্যে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল থাকায় মাথার ত্বক সাস্থ্যকর রাখতে গুরুত্ব পূর্ন ভুমিকা রাখে ।
পেয়ারা পাতার মধ্যে ভিটামিন সি রয়েছে যা চুল বৃদ্বি করতে সহায়তা করে ।
পেয়ারা পাতাতে লাইকোপিন রয়েছে যা সুর্যের UV রশ্মি থেকে রক্ষা করে।
পেয়ারা পাতার ব্যবহারে উপকারিতা
ডায়রিয়ায়
অ্যান্টি-হেলমিন্থিক বৈশিষ্টের কারণে পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে এবং ডায়রিয়ার জন্যে ও এই পেয়ারা পাতা খুব সহযোগী।
কোলেস্টেরল
শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ
মানব শরীরে রক্তে যাদের শর্করার পরিমান অনিয়ন্ত্রক তাদের জন্যে পেয়ারা পাতা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কারণ পেয়ারা পাতার মধ্যে নিহিত ফেনোলিক যৌগ শরীরে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
শুক্রাণুর
ওজন
বায়োঅ্যাকটিভ যৌগ রয়েছে যা মানুষের ওজন কমাতে খুব ভালভাবে কাজ করে। কারণ এতে চিনি ও ক্যালোরির পরিমানে কমিয়ে আনে ।
পেয়ারা পাতার ব্যবহারে অপকারিতা
- যাদের রক্তপাতের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্যে পেয়ারা পাতা অপকার বয়ে আন্তে পারে তাই সাবধানে ব্যবহার করবেন ।
- কিডনি জনিত সমস্যা করতে পারে পেয়ারা পাতা। কারণ পেয়ারা পাতার মধ্যে কিডনিতে পাথর জন্মানোর মত গুন্ রয়েছে তাই সাবধানে পেয়ারা পাতা সেবন করা দরকার যারা কিডনি সমস্যা ভুগছেন ।
- সদ্য মা হওয়া মেয়েরা এই পেয়ারা পাতা থেকে দূরে থাকবেন কারণ এই পেয়ারা পাতা সেবনের মাধ্যমে কিছু ক্ষতিকর বিষয় মা থেকে শিশুর মধ্যে বিস্তার হতে পারে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে পেয়ারা পাতা খাওয়া দরকার দুগ্ধদানকারী মায়েদের।
পেয়ারা পাতার ব্যবহারে ভেষজ চা খাওয়ার নিয়ম
শুধু গুন্ থাকলেই আপনি সেইভাবে যদি সেটাকে ব্যবহার করতে না জানেন তাহলে যথেষ্ট গুন্ আপনি পাবেন না । তাই পেয়ারা পাতার খাওয়ার নিয়ম জানলে আপনার অনেক ভিটামিনের চাহিদা পূরণ হবে আশা করি। কিন্তু স্বাস্থ্যবিষয়ক এক প্রতিবেদনে বলছেন পেয়ারা পাতা অনেক গুন্ সমৃদ্ধ হলেও অনেক উপকারী।
এই পেয়ারা পাতার চা বানিয়ে খেলে বেশি পরিমানে ভিটামিনের উপাদান গুলি পাওয়া যায়। অ্যা ন্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফ্লেভোনয়েড রয়েছে যা আপনার অনেক রকমের ঔষধি গুন্ রয়েছে যা আপনাকে অনেকরকমের সমস্যার সমাধান দেবেন । এই চা বানাতে হলে আপনাকে অনেক্ষন ধরে গরম পানির মধ্যে ফুটিয়ে নিয়ে তারপর এই ভেষজ চা বানিয়ে খেতে হবে।
যতেষ্ঠ পরিমানে গরম পানিতে ফুটিয়ে এই ভেষজ চা আপনি প্রতিদিন পান করলে আপনার অনেক রোগ থেকেও মুক্তি পাবেন। বিশেষ করে যাদের কোলেস্টরল, ডায়রিয়া এবং সুগার রুগীর জন্যে বেশি উপকারী।
পেয়ারা পাতার ব্যবহার দিয়ে রূপচর্চা
আপনি কি জানেন রূপচর্চা করতে এই পেয়ারা পাতা বিশেষ ভূমিকা রাখে। অনেকেই আমরা কৃত্রিম ঔষধের দিয়ে রূপচর্চা করতে ব্যস্ত থাকি। এতে সমস্যা সমাধান তো দূরের কথা আরো বেশি সমস্যার সৃষ্টি হয়।
কিন্তু এই পেয়ারা পাতা দিয়ে আপনি রুপচর্চার একটি উত্তম পথ খুঁজে পাবেন । চলুন তাহলে কিভাবে এই পেয়ারা পাতা দিয়ে রুপের তৈলাক্ত ভাব এবং ত্বক পরিস্কার করা যায় সেই সম্পর্কে একটা মিশ্রন জেনে আসি ।
প্রথমে আপনি কয়েকটি পেয়ারা পাতা বেটে ভাল করে মিহি করুন দুই টেবিল চামচ পর্যন্ত। এবার এর সাথে লেবুর রস মিশান এক টেবিল চামচ পর্যন্ত। তারপর এই মিশ্রণটি আধাঘন্টা পর্যন্ত মুখে লাগিয়ে রাখুন পরম যত্নে।
এরপর আপনি ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। আপনার মুখের তৈলাক্ততা এবং পরিষ্কারের জন্যে এই মিশ্রণটি সপ্তাহ ব্যাপী এবং দশদিন পর্যন্ত দেখুন তাহলে আপনি একটি ভাল ফল পাবেন পেয়ারা পাতা দিয়ে রূপচর্চার ক্ষেত্রে।
ব্যবহারের জন্যে পেয়ারা পাতা দিয়ে তেল বানানোর নিয়ম
পেয়ারা পাতা ব্যবহার করে আপনি অনন্য এক রূপ দিতে পারেন আপনার চুলকে এবং মাথার ত্বক কে। তাই ব্যবহারের জন্যে পেয়ারা পাতার তেল বানানোর নিয়ম রয়েছে কিছু। সেই পদ্বতি ফলো করে চললে আপনি অনেক সুন্দর্য এবং মাথার ত্বককে সুস্থ রাখতে পারবেন।
কয়েকটি পেয়ারা পাতাকে আধা লিটার পানির মধ্যে দিয়ে অনেক্ষণ ধরে ফুটিয়ে নিন। তারপর পাতা গুলি ছেকে তুলে ফেলুন। এবার পানি গুলিকে ভাল করে একটু ছেকে নিন পরিষ্কার সাদা কাপড় দিয়ে।
এবার এই তেলকে আপনি চাইলে মাথার মধ্যে লাগাতে পারেন। স্নানের পরে মাথা পরিষ্কার করে আপনি এই তেল ১০ মিনিটের মত মালিশ করুন। তাহলে আপনার মাথার ত্বক খুব ভাল থাকবে শুষ্কতা ভাব কমে যাবে এবং চুলের সুন্দর্যের জন্যে আপনি চাইলে এই তেল এক বা দুই ঘন্টা পর্যন্ত লাগিয়ে রাখতে পারেন।
কারণ এই পেয়ারা পাতার তেলে আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। এবার দুই ঘন্টা পর হালকা গরম পানি দিয়ে আপনার চুল ধুয়ে ফেলুন। এই পদ্বতির মাধ্যমে আপনি সপ্তাহে চাইলে দুই কিংবা তিন বার পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারেন।
তবে যাদের চুল পড়ার সমস্যা থাকে তাদের জন্যে। চুলের সুন্দর্য বর্ধনের ক্ষেত্রে আপনি চাইল সপ্তাহে এক বা দুই বার পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারেন।
আরও জানুনঃ জন্মান্তরবাদ কাকে বলে আসলে কি জন্মান্তরবাদ সত্য ?
পেয়ারা পাতা ব্যবহারে সতর্কতা
- পেয়ারা পাতার ব্যবহার করার সময় আপনার চোখ সাবধানে রাখুন ।
- পেয়ারা পাতায় অনেক রকম পোকামাকড় আকড়ে থাকে তাই লাগানোর আগে বা সিদ্ধ করার আগে ভাল করে ধুয়ে নিন ।
- কালো চুলের অধিকারীরা একটু সাবধানে এই পেয়ারা পাতার ব্যবহার করবেন । হয়ত এই পেয়ারা পাতা আপনার কালো চুলের ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি করতে পারে ।
- এলার্জিজনিত মানুষদের একটু সাবধানতার মধ্যে পেয়ারা পাতার ব্যবহার করতে বলা হয়ে থাকে ।
চুলের যত্নে পেয়ারা পাতার ব্যবহার সম্পর্কে লেখকের শেষ মন্তুব্য
তবে বিশেষ কিছু আর বলার নেই কারন পেয়ারা পাতার অনেক গুন থাকলে ও অনেকের জন্যে কারন বসত হয়ত ব্যবহারে একটু বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে । তবে চুলের যত্নে পেয়ারা পাতার ব্যবহার খুবই চমকপ্রদ একটি বিষয় ।
অনবরত জিজ্ঞাসা (FAQ)
পেয়ারা পাতার ব্যবহারে কি চুল কালার হয় ?
হ্যা হয়। পেয়ারা পাতার দ্রবণে আপনার চুলের কালার পরিবর্তন হয় এবং আপনার চুলের এবং মাথার ত্বক সুস্থ রাখতে ভাল কাজ করে ।
চুলের যত্নে পেয়ারা পাতার ব্যবহার কতদিন করতে হয় ?
সপ্তাহে ২ বার পর্যন্ত পেয়ারা পাতার ব্যবহার করতে পারেন চুল সুন্দর ও মজবুত রাখতে ।
আপনার জন্যেঃ সিঙ্গার চার্জার ফ্যানের দাম ২০২৪
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url