এইডস রোগ কোন ভাইরাসের মাধ্যমে ছড়ায়
সূচীপত্র তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানব এইডস রোগ কোন ভাইরাসের মাধ্যমে ছড়ায় এবং এর সাথে থাকছে এইডস এর ঔষধ এর নাম, এইডস কিভাবে ছড়ায়, বিশ্বের প্রথম এইডস রোগী কোন দেশে শনাক্ত হয়, এইডস কি ধরনের রোগ, কত সালে সর্বপ্রথম এইডস ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া যায় এবং এইডস নিয়ে কিছু জানা অজানা কথা ।
এইডস কি ?
আসলে এইডস হলো ইংরেজি নাম ( AIDS ) যার ব্যাখ্যা হলো Acquired Immuno Deficiency Syndrome) বা যাকে বাংলায় বলে অর্জিত প্রতিরক্ষা অভাবজনিত রোগলক্ষসমষ্টি।
এইডস রোগ কোন ভাইরাসের মাধ্যমে ছড়ায়
এই এইচ এই ভি (HIV) ভাইরাস আক্রমন করলে তক্ষনাৎ এইডস হয় না । হলে প্রথমে ইনফ্লুয়েঞ্জার মত সংক্রামক ব্যাধি বা উপসর্গ দেখা দেয় এবং সেটা অনেক দিন কষ্ট দেয়। আবার চলে যায়।
আবার অনেক দিন ধরে আর কোন সংক্রমক ব্যাধি হয় না। এইটা বিরূপ ধারণ করে তখন, যখন এই ভাইরাসের ফলে মানুষের দেহে সম্পূর্ণ প্রতিরক্ষা ক্ষমতা নষ্ঠ করে দেয়। অর্থাৎ এই HIV ভাইরাস আক্রমের সাথে সাথে আপনার শরীরের প্রতিরক্ষা ক্ষমতা ধীরে ধীরে নষ্ঠ করে দেয়।
এবং তখন দুর্বল শরীরের মানুষের মধ্যে অর্থাৎ যাদের মধ্যে প্রতিরক্ষা ক্ষমতা একদম নেই বললেই চলে সেই সব মানুষের মধ্যে ইনফ্লুয়েঞ্জার মত সংক্রামক রোগ হয়। আরো কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। তার মধ্যে কিছু টিউমার ও দেখা দিতে পারে এবং সাথে কাশি। এই পর্যায়ে আসলে তাকে বলে (AIDS) এইডস । তারমানে হল এইডস (AIDS) রোগ এইচ আই ভি (HIV) ভাইরাস এর মাধ্যমে ছড়ায়।
( উইকিপিডিয়ার মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে তথ্য কনিকা সংগৃহীত )
এইডস কি ধরনের রোগ
অনেকের বেকুল জিজ্ঞাসা এইডস রোগ কোন ভাইরাসের মাধ্যমে ছড়ায় । এইডস হলো লেন্টিভাইরাস নামের একটি গোত্রের ভাইরাস । যা মানুষের শরীরের সমস্ত প্রতিরক্ষা সিস্টেম নষ্ট করে দিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও ধ্বংস করে দেয়। এবং ধীরে ধীরে বিভিন্ন সংক্রমক ব্যাধির মাধ্যমে মানুষকে মৃত্যু পর্যন্ত নিয়ে যায় । তাই এই এইডস কে মরনঘাতী রোগ ও বলে ।
এটি হলো দীর্ঘমেয়াদি একটি রোগ । এইডস রোগ আক্রান্ত হলে মানুষ সঙ্গে সঙ্গে মারা যায় না । দীর্ঘদিন এই ভাইরাসের ক্ষমতার প্রভাবে যখন মানুষের মধ্যে সমস্ত প্রতিরক্ষা ক্ষমতা বিনষ্ঠ করে দেয় তখন এই এইডস মানুষকে মৃত্যু পথযাত্রী করে দেয়।
এই ভাইরাস একবার মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে দূর করার কোন উপায় এই পর্যন্ত তৈরী হয় নি বা কোন সনামধন্য ঔষধ ও এখনো তেমন আবিষ্কৃত হয় নাই।
তবে চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে, এই এইডস রোগ হওয়ার আগে এইচ আই ভি ভাইরাস আক্রান্ত হলে মানুষ, ধীরে ধীরে এইডস রোগে পরিণত হয়।
এইচ আই ভি ভাইরাস এইডস রোগে পরিণত হতে হতে বিনা চিকিসায় প্রায় দশ বছর সময় লেগে যায়। তবে চিকিৎসার মাধ্যমে আরো কিছু বছর বেশি সময় লাগে। তবে কিছু সমন্বিত পদ্বতির মাধ্যমে যে চিকিৎসা বের হয়েছে তা অত্যন্ত ব্যয় বহুল।
এইডস কিভাবে ছড়ায়
অনেকে বলে এইডস রোগ কোন ভাইরাসের মাধ্যমে ছড়ায় আবার অনেকে বলে এইডস কিভাবে ছড়ায়। এইডস রোগ যেভাবে ছড়াক না কেন। এই এইডস রোগ একটি দীর্ঘমেয়াদি মরণ ঘাতী রোগ। তবে কিছু মাধ্যমেই তো এইডস রোগ ছড়ায়। তাই চলুন সেই সব বিষয় নিয়ে একটু আলোচনায় যাওয়া যাক ।
- এইডস রোগ আছে এই রকম মানুষের দেহে ইনজেকশন পুশ করার পর সেই একই সিরিঞ্জ দিয়ে অন্য ব্যক্তির শরীরে ইনজেকশনের সিরিঞ্জ পুশ করার মাধ্যমে এইডস রোগ ছড়ায়।
- এইডস রোগে আছে এই রকম ব্যক্তির বা এইডস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত গ্রহণ করলে সরাসরি এইডস রোগ ছড়ায়।
- এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে অনিয়ন্ত্রিত দৈহিক সম্পর্কের মাধ্যেম বা কন্ডোম বিহীন দৈহিক মেলামেশার মাধ্যমে এইডস রোগ ছড়ায় ।
- গর্ভবতী মায়ের শরীরে এইডস আছে এই রকম মায়েদের থেকে সন্তানের মাধ্যমে ও এইডস রোগ ছড়ায় । তবে গর্ভবতীদের ক্ষেত্রে কিছুটা বিভ্রান্তি রয়েছে ।
তবে মনে রাখতে হবে এইচ আই ভি সংক্রমক নই। এইডস আক্রান্ত রোগীর সাথে সংস্পর্শে আসলে এই রোগ ছড়ায় না। তাছাড়া ও আক্রান্ত রোগীর কাপড় পড়লে ,খাওয়া দাওয়া করলে, একই মশার দুজনের মধ্যে কামড়ালেও এইডস রোগ ছড়ায় না।
এর কারণ হচ্ছে এইডস আক্রান্ত রোগীর শরীর থেকে নিঃসৃত তরল বা রক্ত অন্য মানুষের অভ্যন্তরে সরাসরি প্রবেশ না করলে সহজে এইডস রোগ হয় না। কারণ এইচ আই ভি ভাইরাসে স্নেহের আবরণের কারণে বাইরে আসলে সহজে ভেঙে যায়। তাই এই এইচ আই ভি ভাইরাস শরীরের বাইরে আসলে সহজে মরে যায়।
কত সালে সর্বপ্রথম এইডস ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া যায়
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সংস্থা সিডিসি (CDC) এই এইডস (AIDS) বা এইচ আই ভি (HIV) ভাইরাসের সন্ধান পান ১৯৮০ সালে । তবে ১৯৮১ সালে এই সংস্থাটিই এই এইডস সনাক্ত করে ।
এটি ১৯শ শতকের শেষের দিকে এবং ২০শ শতকের শুরুর দিকে পশ্চিম-মধ্যে আফ্রিকার অ-মানব জাতি থেকে এই ভাইরাসের উৎপত্তি বলে ধারণা করে থাকে ।
আরও পড়ুনঃ
এইডস এর ঔষধ এর নাম
এইডস রোগ কোন ভাইরাসের মাধ্যমে ছড়ায় এমন প্রশ্নের জবাবের পর মানুষ এইডস রোগের ঔষধের নাম ও অনেকে জিজ্ঞাসা করেছেন। সেই ক্ষেত্রে বলা যায়। এখনো পর্যন্ত এইডস রোগের ঔষধ সম্পূর্ণ ভাবে বের হয় নি। এবং ভাল চিকিৎসা পদ্বতিও এখনো বের হয় নি।
তবে অনেক ঔষধ বিজ্ঞানীরা তৈরী করেছেন। তবে চিরতরে নির্মূল করার ঔষধ এখনো বের হয়নি। পর্যায়ক্রমে যা ঔষধ বের হয়েছে তার মধ্যে প্রথম শ্রেণীর ঔষধের নাম হলো নিউক্লিওসাইড রিভার্স ট্রান্সক্রিপটেজ ইনহিবিটর (Nucleoside reverse transcriptase inhibitors) .
সেই ঔষধ আবার এইডস রোগকে বিলম্বিত করতে পারবে সর্বোচ্চ। একেবারে নির্মূল করতে পারবে না। তাই এইডস রোগের আরেকনাম হলো মরণ ব্যাধি রোগ।
বিশ্বের প্রথম এইডস রোগী কোন দেশে শনাক্ত হয়
যদিও ইউকিপিডিয়ার বিশ্ব মুক্ত কোষের তথ্য তথ্য মতে আমরা যা পাই। তাহলো ১৯৮১ সালেই সনাক্ত করে মার্কিন যুক্তরাষ্টের রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সংস্থা সিডিসি এইচ আই ভি ভাইরাস বা এইডস রোগের সনাক্ত করেন। কিন্তু Hindustan Times Bangla (হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) বলছে ১৯৫৭ সালে কঙ্গোর রাজধানী কিনহাসা থেকে এই রোগের উৎপত্তিই বা সনাক্ত করেন।
১৯৫৭ সালে বিজ্ঞনীরা কঙ্গোর রাজধানী কিনহাসার এক ব্যক্তির রক্ত পরীক্ষা করতে গিয়ে এই এইচ আই ভি ভাইরাস উপস্থিতি টের পান। তখন থেকেই অর্থাৎ ১৯৫৭ সালেই এই এইডস রোগী প্রথম সনাক্ত হয় সেইটা নিশ্চিত করে বলায় যায়।
এখন কথা হলো এই ভাইরাস বা এইডস কিভাবে কিনহাসের ব্যক্তির শরীরে আসলো । তখন কঙ্গোর লোকেরা বনে মাংস শিকারের জন্যে শিম্পাঞ্জিদের সাথে রক্তের সংস্পর্শে আসলে এই এইচ আই ভি ভাইরাস বা এইডস রোগের ছড়িয়ে পড়ে এবং উৎপত্তি হয় ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url