সূচীপত্রঃটেনশন থাকা স্বাভাবিক। আমাদের মধ্যে এই টেনশন কথাটি মনে পড়লেই কেমন জানি একটা অদেখা ভয় কাজ করে। কারণ এই টেনশন থেকে ভিবিন্ন রকম রোগের সৃষ্টি হয় মানব দেহের মধ্যে। অকালে তাই রোগে ভুগে শরীর নষ্ট করার থেকে মুক্তির পথ খুঁজতে এই আর্টিকেলে টেনশন নিয়ে আমরা বলার চেষ্টা করবো।
টেনশন কি, কেন হয় এবং টেনশন দূর করার কি কোন ঔষধ আছে? বা থাকলে টেনশন দূর করার ঔষধের নাম কি?টেনশন দূর করার সহজ উপায় কি?টেনশন দূর করার হোমিওপ্যাথি ঔষধের নাম ? কি খাওয়ার খেলে টেনশন দূর করা যায় এই সব কথা বিষয়গুলি নিয়ে আজকে আমরা আলোচনা করব। সাথে সময় দেবেন বন্ধুরা আশা করি আপনাদের উপকারে আসবে।
টেনশন কি এবং কেন হয়
টেনশন হলো আমাদের জীবনের পাওয়া আর না পাওয়ার পরিনাম। অথবা আমাদের ঘটে যাওয়া সব কিছুর প্রতিক্রিয়া কে টেনশন বলে। আপনার জীবনে যা কিছু আছে বা ছিল তা সব কিছুকে রক্ষনাবেক্ষন এবং পর্যবেক্ষণ এই সব কিছুর নাম হলো টেনশন। অনেক ভাবেই এই টেনশনকে বর্ণনা করা যায়। কারণ একেক মানুষের টেনশন একেক প্রকার হয়ে থাকে। পাওয়া নাপাওয়ার উপর নির্ভর করে।
টেনশন দূর করার ঔষধের নাম
আমরা অনেকে টেনশন দূর করার জন্যে ঔষধের নাম জানতে চায় । কারণ টেনশন আমাদের স্বাস্থ্যের এবং মনের খুব ক্ষতি সাধন করে। মনে রাখবেন মস্তিস্ক সতেষ্ট বিশ্রাম পেলেই আমাদের টেনশন দূর হয় অনেকাংশে।
তা কিন্তু সম্পূর্ণ রূপে দূর হয় না। টেনশন দূর করার ঔষধ মানে হলো যথেষ্ট মস্তিষ্কের বিশ্রাম। আর এই ঔষধের মাধ্যেম আমাদের মস্তিস্ককে বিশ্রাম দেওয়া হয়। আমাদের স্নায়ুকে শিথিল রাখা হয়।
কিন্তু এই টেনশন দূর করার ঔষধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া সেবন করলে আপনি দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগতে পারেন। এমনকি কোমায় পর্যন্ত চলে পারেন। তাই সাবধানে এই টেনশনের ঔষধ সেবন করবেন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে। চলুন তাহলে আমরা টেনশন দূর করার ঔষধের নাম গুলি একটু জেনে আসি।
- Tizapam
- Brufen MR
- Fenlong
- Combiflam
- Endache
- Ibugesic Plus
উপরুক্ত এই সব ঔষধ গুলি আপনার টেনশন দূর করার জন্যে যথেষ্ট অবদান রাখে।
বিঃ দ্রঃ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ঔষধ সেবন নিষিদ্ব ।
টেনশন দূর করার হোমিওপ্যাথি ঔষধের নাম
টেনশন দূর করার জন্যে হোমিওপ্যাথি ঔষধের নাম জানতে এসেছেন এই ব্লগে। তাদের জন্যে বলা, টেনশন দূর করার জন্যে ঔষধের নাম আলোপ্যাথিক চিকিৎসায় যেমন রয়েছে। ঠিক তেমন করে হোমিওপ্যাথি তে ও রয়েছে ।
হোমিওপ্যাথিক বিদ্যা অনেক দিন পুরানো দিনের চিকিৎসা বিজ্ঞান। এটি এখনো পর্যন্ত গভীর রোগের হোমিওপ্যাথিক ঔষধের মাধ্যমে চিকিৎসা দিয়ে থাকে।
তাই অনেকে এই হোমিওপ্যাথিক ঔষধের উপর নির্ভর করে এবং বিশ্বাস করে। দেখুন টেনশন কে হোমিওপ্যাথিক ভাষায় এংজাইটি বলে। এই এংজাইটি অনেক ভাবে হয়ে থাকে। মৃত্যু ভয়।
হতাশা। ক্লান্ত শ্রান্ত অথবা ঘাম দেওয়া অনেক প্রকার হয় আবার অনেক সময় কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। কারো কারো এই টেনশন এর কারণে তুতলানো শুরু হয়ে যায়। একেক কারণে এই টেনশনের হোমিও ডাক্তার রা ঔষধ দিয়ে থাকে।
তাই আপনার সমস্যা ডাক্তারের কাছে খুলে বলুন এবং তারা নির্দিষ্ট প্রয়োজন অনুসারে আপনাকে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ রিকমেন্ড করবে। চলুন আমরা একটু দেখে আসি টেনশন দূর করার জন্যে কি কি হোমিওপ্যাথিক ঔষধের নাম ডাক্তার দিয়ে থাকে।
- Gelsemium Sempervirens
- Argentum Nitricum
- Calcarea Carbonica
Argentum Nitricum - মানুষের মধ্যে কোন ঘটনার আগে যদি টেনশন হয় তাহলে Gelsemium Sempervirens বা Gelsemium Sempervirens দেওয়া যেতে পারে । যেমন ইন্টারভিউ বা পরিক্ষা এই সব কারনে টেনশন হলে ।
Calcarea Carbonica - যারা সহজে টেনশনের কারনে খুব তারাতারি ভয় পায় তাদের এই Argentum Nitricum খেতে পারেন । যেমন ভিত সন্তস্থ থাকলে বা বিপদের সম্মুখীন হওয়ার মত টেনশন থাকলে ।
কি খাওয়ার খেলে টেনশন দূর করা যায়
আমাদের এই শরীরের সমস্ত কিছু তৈরী হয় কেবল মাত্র খাবার থেকে। আপনার মানসিক টেনশন তৈরী হওয়ার পর যেমন শরীর মধ্যে প্রভাব পড়ে। ঠিক একই ভাবে আপনার টেনশন দূর করার জন্যে নিত্যদিনের ভাল খাবারও শরীরের জন্যে ভাল গুন্ বয়ে আনে।
তাই প্রতিদিনের খাওয়ার সময় এমন কিছু খাবার আপনাকে খেতে হবে যা আপনার টেনশন দূর করতে সাহায্য করবে।
যেমন ভিটামিন সি খুব বেশি কাজ করে টেনশন দূর করার জন্যে। তাই প্রতিদিনের খাওয়ারে লেটুস পাতা, গাজর, পালংশাক এবং বাঁধাকপি আপনি খেতে পারেন। যেটা যেই সিজনে পাওয়া যায়। এবার আসি কি ফলের খেলে আপনি টেনশন দূর করতে পারবেন।
ভাত খাওয়ার পর আমরা সকলে স্বাভাবিক ভাবে ভিবিন্ন রকম ফল মূল খেয়ে থাকি। সেই নিত্যদিনের ফল আহারে আপনি কমলালেবু এবং আঙ্গুর যোগ করতে পারেন। কারণ এই ভিটামিন সি সমৃদ্ব ফল আপনার স্নায়ুকে শিথিল রাখতে খুব সহায়তা করে। এবং আপনার টেনশন দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
টেনশন দূর করার সহজ উপায়
অনেক কখন ধরে আমি বক বক করছি আর আপনারা পড়ছেন। এতক্ষন আমরা টেনশন দূর করার বিভিন্ন রকম ঔষধের নাম বলেছি। যেমন এলোপ্যাথিক, হোমিওপ্যাথিক এবং খাবারের কথা। কিন্তু আপনি জানেন কি টেনশন দূর করার সহজ উপায় কি ? এতক্ষন বলেছি ঔষধের মাধ্যমে আমরা কিভাবে টেনশন দূর করতে পারি।
কিন্তু এখন বলার চেষ্টা করবো খুব সহজে কিভাবে আপনি টেনশন দূর করবেন। চলুন তাহলে দেখা যাক কি উপায়ে খুব সহজে টেনশন দূর করতে পারি। আপনার মনের মধ্যে সমস্ত টেনশন দূর করার মহাঔষধ রয়েছে। কিছু কিছু অভ্যাসের মাধ্যমে আপনি টেনশন দূর করতে পারবেন। সেইগুলি নিচে দেওয়া হল ঃ
মনসংযোগ
মনসংযোগ মানে হলো মনকে এক জায়গায় যুক্ত রাখা। আরো সহজে বললে ম্যাডিটেশন করা। প্রতিদিন ম্যাডিটেশন করলে আপনার টেনশন একদম শূন্যের কোঠায় চলে আসবে। কারণ হচ্ছে আমাদের মন খুব ব্যস্ত থাকে প্রতি মুহূর্তে। এক তিল পরিমান সময় নেই মনকে বিশ্রাম নেওয়ার।
তাই তো দেখবেন রাত্রে ঘুম গেলেও আমরা স্বপ্ন দেখি। কারণ মনের বিশ্রাম নেই। দেহের বিশ্রাম আছে ঘুমালে। তাই ম্যাডিটেশন এর মাধ্যমে মন যতার্থ বিশ্রাম পাই এবং মন সংযোগ হয়। এর ফলে এই মন খুব উৎফুলল থাকে এবং সঠিক ভাবে সিদ্বান্ত নিতে পারে এবং টেনশন মুক্ত থাকে।
ব্যস্ততা
ব্যস্ততা রাখবেন এই কারণে যে আপনি যদি কোন কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন। তাহলে মন ও ওই কাজে ব্যস্ত থাকবে যার ফলে টেনশন করার ক্ষমতা আর তখন থাকবেনা। এবং আপনি এই ব্যস্ততার মাধ্যমে টেনশন দূর করতে পারবেন খুব সহজে।
প্রাণ খুলে হাসা
প্রাণ খুলে হাসি এইটা যারা হৃদরোগ রয়েছে এবং যাদের টেনশন রয়েছে প্রচুর তাদের জন্যে খুব বেশি দরকার। প্রাণ খুলে হাসলে আপনার মানসিক চাপ কমে কারণ আপনার দেহের বিভিন্ন রকম সংবহন তন্ত্র গুলি ভাল থাকে ।
তাই টেনশন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তাই অনেক ডাক্তারেরা টেনশনের রুগী এবং হার্টের সমস্যা যাদের রয়েছে তাদেরকে প্রাণ খুলে হাসা ঠাট্টা করার জন্যে উপদেশ দিয়ে থাকে।
রাগ না পোষা
মানুষের মধ্যে রাগ থাকবে এইটা স্বাভাবিক। কিন্তু এই রাগের কারণে আমরা টেনশন করি বেশি। নিজের মধ্যে বেশিক্ষন রাগ পোষে রাখবেন না। তাতে আমাদের ক্ষতি হয়। কারণ যা কিছু ঘটনার জন্যে আমরা রাগ করি সেটা তাড়াতাড়ি মিটিয়ে ফেলুন অথবা ঝেড়ে ফেলুন। অথবা মনকে শিথিল করে রাগ ত্যাগ করুন।
সরল হওয়া
কোনো বিষয়কে কঠিনভাবে চিন্তা না করে সরল স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিন। তাতে আপনার মস্তিস্ক ভাল থাকে এবং টেনশন দূর হয়ে যায়। সরল হলে মানুষের অন্তর বিশাল হয়। এবং আপনার ভবিষ্যতে ও টেনশনের জন্যে একটি ঔষধ বলতে পারেন এই সরল মানসিকতা।
একাকিত্ব না থাকা
যাদের মধ্যে টেনশন বেশি কাজ করে। তারা একদম একা থাকা ভাল নয়। তাছাড়াও একাকিত্ব থাকলে মানুষের মধ্যে এমনেই টেনশন এসে ভর করে। তাই তো নিজে সব সময় নিজেকে অন্যকারো সঙ্গে মিশিয়ে নিন। আপনার মনের খবর অন্য কারো কাছে প্রকাশ করুন। সুখ দুঃখ ভাগাভাগি করে নিন। এতে করে আপনার মনের টেনশন খুব সহজে দূর হয়ে যাবে।
নিজেকে ছোট না ভাবা
নিজেকে কোনোদিন ছোট ভাববেন না। কারণ এই নিজেকে ছোট ভাবার চিন্তা আপনাকে বিশাল টেনশনে ফেলবেন চিরদিন। তাই কখনো নিজেকে ছোট ভাবা যাবে না। এই বিশাল জগতে প্রত্যেক মানুষ যেমন আপনিও ঠিক তেমন। মনে রাখবেন আপনার মধ্যে বিশাল শক্তি রয়েছে। এইভাবে নিজেকে টেনশন থেকে মুক্ত রাখবেন।
শেষ কথা
টেনশন দূর করার ঔষধের নাম সম্পর্কে আমরা অনেক কিছু বলার চেষ্টা করেছি। হোমিওপ্যাথি এবং এলোপ্যাথিক ঔষধ সম্পর্কে ও অনেক কিছু বলার চেষ্টা করেছি। যাতে করে আপনাদের মনের ভ্রম চলে যায়। তাই আশা করি এই বিষয় নিয়ে আর তেমন কিছু জানার আছে বলে আমার মনে হয় না।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url