অভিশাপ কি বাস্তবিক আছে নাকি কাল্পনিক

অভিশাপ কি বাস্তবিক আছে নাকি কাল্পনিক

পোস্টসূচীপত্র অভিশাপ শব্দটি শুনলে আমরা সহজেই ভটকে যায়। কারণ এটি আমাদের মস্তিষ্কের মধ্যে জেঁকে বসে আছে সেই দীর্ঘদিন ধরে। তাই অনেকে আবার আধুনিক যুগের তালিমে এই অভিশাপ সম্পর্কে জানতে চায় বা জানার ইচ্ছা খুব বেশি যে, অভিশাপ কি বাস্তবে আছে নাকি কাল্পনিক ? চলুন আমরা এই অভিশাপ বিষয়ে একটু গভীরে প্রবেশ করি ।

যদি অভিশাপ থাকে তাহলে অভিশাপ বিষয়টা কি  ? অভিশাপ কি সত্যিই আছে নাকি আমাদেরকে বোকা বানানো হচ্ছে ? যদি সত্যিই অভিশাপ বলে কিছু থেকে থাকে, তাহলে এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কি? অর্থ্যাৎ এটা কিভাবে কাজ করে ? যদি প্রমান হয় যে হ্যা অভিশাপ এক্সিস্ট করে , তাহলে এই অভিশাপ থেকে বাঁচার উপায় কি? 

আজকে এই গভীর তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করবো বন্ধুরা। আশা করি আপনারা আজকে এক নতুন দিগন্তের শুভ সূচনা দেখতে পাবেন আমাদের এই আর্টিকেলে। তাই সঙ্গে থাকুন এবং দীর্ঘদিনের অজানা কথা আমরা আজকে জানব। 

অভিশাপ বিষয়টা কি ?


অভিশাপ বিষয়টা আলোচনা করার আগে আমরা একটু ছোট্ট গল্পের মাধ্যমে প্রবেশ করি। আপনাদের বিষয়টা বুজতে সহজ হবে। অমরেশ বাবু ছোট্ট একটি কার , মাইক্রো গেরেজে গাড়ী পরিষ্কারের কাজ করতেন সাথে কার মাইক্রোর মেকানিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং এর কাজ ও শিখতেন। কিন্তু বেতন পেতেন শুধু গাড়ি পরিষ্কারের কাজের জন্যে। 

সেই টাকা দিয়ে স্বামী স্ত্রী আর একজন ৪ বছরের সন্তান নিয়ে ৪ হাজার টাকার ভাড়ার ঘর নিয়ে কোন মতে সুখে দুঃখে চলে যাচ্ছে তার দিন। এই বেতনে অন্তত করো কাছে ধার করতে হত না।  কিন্তু একদিন বিধি হলেন বাম। তারা গাড়ি পরিষ্কারের জন্যে শুধু একজন মানুষ রাখবেন না। তাকে  চাকরি থেকে বের করে দিলেন। এইদিকে দুই মাস ধরে জমিদার বাসা ভাড়া না পেয়ে অমরেশ বাবুকে বের করে দিলেন বাসার মালিক। 

তখন রিক্ত হস্তে অনরেশ বাবু বের হয়ে গেলেন এবং মনে কষ্ট পেলেন এবং উপরের দিকে তাকিয়ে বললেন উপরে একজন আছে। তিনিই বিচার করবেন। এই কথা বলে চলে গেলেন। কিছু দিন পর ওই অমরেশ বাবুর আবার চাকরি হলো এবং সে ভাল বেতনের মাইনেও পাচ্ছেন। কিন্তু একদিন আগের পুরোনো ভাড়া বাসার পথ দিয়ে আসতে লাগলেন। 

তখন দেখতে পেলেন তার পুরোনো জমিদার যেটা তাকে বাসা থেকে বের করে দিয়েছিলেন বাসা ভাড়ার অভাবে, সেই জমিদার মারা গেছেন। তখন অমরেশ বাবু মনে মনে বললেন আচ্ছা তাহলে এইটা কি অভিশাপ বলে ?

ভিশাপ কি ?


অভিশাপ কি? তাহলে কি অভিশাপ দেখা যায়। কারণ এটি তো কোন স্টিকার বা ব্যানার না যে কোথাও দেখা যায় মত লাগানো যাবে। অভিশাপ কিভাবে লাগে। 
বর্তমান যুগে অভিশাপ সম্পর্কে সুন্দর একটি মেসেজ দিয়েছেন "ম্যাসাচুসেটস কলেজ অফ লিবারেল আর্টস" এর অধ্যাপক ডঃ টিমোথি জে, সেটি হলো, 

“ মন আর মস্তিস্ক একসাথে মিশে গিয়ে এক ভয়ানক বাক্য তৈরি  করেন । যে ভয়ানক বাক্যের জন্ম হয় মানুষের তীব্র কষ্ট কিংবা কারো উপর জমে থাকা প্রচন্ড ক্ষোভ থেকে । সেই বাক্যকে অভিশাপ বলে । “

আচ্ছা তাহলে আমরা একটি ডেফিনেশন হয়ত পেয়েছি অভিশাপের। কিন্তু আদৌ কি অভিশাপের অস্তিত্ব আছে ? আমরা শুনতে পায় এই অভিশাপ নিয়ে যেমন "অভিশপ্ত ফল খেয়েছিলেন আদি পিত মাতা " কিংবা "শকুনের অভিশাপে" অথবা "গৌতম মুনির অভিশাপে অহল্যা পাষান (পাথর) হয়ে ছিলেন"। এই যে অভিশাপের কথা আমরা বর্তমানে শুনতে পাই। সেই সমস্ত অভিশাপের কি কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। চলুন আমরা সেটা একটু দেখে আসি। 

দি সত্যিই অভিশাপ বলে কিছু থেকে থাকে, তাহলে এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কি? অর্থ্যাৎ এটা কিভাবে কাজ করে ?


অভিশাপ কে বৈজ্ঞানিক ভাবে কিভাবে ব্যাখ্যা করেছেন আমরা সেটা একটু দেখে আসি । কারন বর্তমান বিশ্বে মানুষ বিজ্ঞানের আদলে যা কিছু প্রমানিত তাই মানুষ সহজে মেনে নিয়ে থাকে ।এবং তাতে কোন প্রকার সন্দেহ আর থাকে না ।তাহলে চলুন অভিশাপের বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমান দেখে আসি ।

অভিশাপের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কি


অভিশাপের বৈজ্ঞানিক ভাবে ব্যাখ্যা দিতে গেলে আমাদের বিজ্ঞানের কিছু  বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে, বিজ্ঞান এর দুইটি পার্ট। একটি হলো ইম্পেরিক্যাল  পার্ট আরেকটি হচ্ছে  হাইপোথেটিকেল পার্ট। এই দুইটি পার্টে বিজ্ঞান চলে। 

আমরা সবাই জানি ইম্পেরিক্যাল পার্ট হলো ভৌত বিজ্ঞান বা ওজন-তাপ-বেগ-সরণ-তরণ ইত্যাদি। 
আরেকটি পার্ট হাইপোথেটিকেল পার্ট এর দুইটি অংশ রয়েছে একটি হলো কোয়ান্টাম ফিজিক্স এবং মেটা ফিজিক্স। 

এই অভিশাপের পিছনে যেটা কাজ করে সেটা হচ্ছে এই মেটা ফিজিক্স এর উপস্তিতি। কারণ এই জগতে যা কিছু সৃষ্টি সব কিছু অজস্র ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ বা পার্টিকেল দিয়ে। সেটা পানি,মাটি, আগুন, মানুষ বা গ্রহ নক্ষত্রের মাজে ও রয়েছে ওই পার্টিকেল। 

যেহেতু মেটা ফিজিক্সের সূত্র মতে একটি পার্টিকেল আরেকটি পার্টিকেল কে আকর্ষণ করে সেহেতু একটি গ্রহ আরেকটি গ্রহকে ও আকর্ষণ করছে। এবং একজন মানুষ আরেকজন মানুষকেও আকর্ষণ করছে। এই আকর্ষনটা হয় হচ্ছে তরঙ্গের মাধ্যমে।  এইভাবে মেটা ফিজিক্সের সূত্র চলে আসছে। এইভাবে বৈজ্ঞানিকভাবে অভিশাপের ব্যাখ্যা দেওয়া যায়। চলুন তাহলে এটি কিভাবে কাজ করে সেটি দেখে আসি। 

অভিশাপ কিভাবে কাজ করে ?


কজন মানুষ যখন গভীর ভাবে ধ্যানে বসে মন এবং মস্তিস্ক কে এক করে কোনো কিছু কামনা করে তখন ওই মানুষের একাগ্র কামনা মানুষটির কাঙ্গিত লক্ষ্য কে ও তরঙ্গের মাধ্যমে আকর্ষণ করে। ফলাফলে বাস্তবে রূপ নেয় সেই কাঙ্গিত বস্তু বা বিষয়কে। চাওয়া পূরণের এই প্রক্রিয়াকে বলে প্রার্থনা।

ঠিক একই ভাবে অভিশাপ ও একই অবস্থার রূপ নেয়। যখন আপনি একজন মানুষ নূন্যতম অপরাধ না করেও মনে খুব বেশি আঘাত পান। হোক সেটা অন্যায় অপবাদ বা প্রতারণা বা মিথ্যা আশ্বাস অথবা শারীরিক বা মানসিক। তখন আপনি  নির্দোষ হয়ে মন ও মস্তিস্ক এক করে যে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির জন্যে কামনা করেন তখন আপনার চাওয়া তরঙ্গাকারে ওই মানুষটির করুন পরিণতিতে আকৃষ্ট করে।

এবং তখন তিনি কয়েকদিনের মধ্যে সেই ফল ভোগ করেন। এবং আপনি অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখেন সেই মানুষটি কিভাবে তার ফল ভোগ করছেন। একেই বলে অভিশাপ। এইটাই বৈজ্ঞানিকভাবে কিভাবে কাজ করে তার ব্যাখ্যা। এখানে একটা কথা বলে রাখা ভাল যে, অভিশাপ দেওয়ার জন্যে আপনি কোনো দরবেশ বা সাধু সেজে অভিশাপ দিলে হয় না। 

বা সিনেমার ডায়লগের মত করে এই তুই দুই দিনের মধ্যে মারা যাবি ধংশ হয়ে যাবি বা কয়েকদিনের মধ্যে ফকির হয়ে যাবি এই রকম হাবি জাবি অনেক কিছু বললে হয়ে গেল তা কিন্তু নই। অভিশাপ এমনও হয় এটি একজন মানুষের দীর্ঘদিনের জমে থাকা সবচেয়ে ক্ষোভ বা অতি দুঃখ থেকে বা বেদনা থেকে
বুকের সবচেয়ে গভীরতম স্তর থেকে বের হয়ে আসা দীর্ঘ নিঃস্বাস টি হতে পারে অভিশাপ ।

ভিশাপ কিভাবে কাজ করে তার উদাহরন সহ প্রমান


এতক্ষন ধরে আমরা অভিশাপের অনেক কথা বলেছি। এবং আমরা অভিশাপ সম্পর্কে মৌখিক ভাবে বলেছি। এবার আমরা অভিশাপের প্রেক্টিকেল চিত্রের মাধ্যমে দেখব কিভাবে এটি কাজ করে। মন মস্তিক্স এবং সামাজিক প্রেক্ষাপট থেকে কিভাবে অভিশাপ বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। 


ডাঃ টিমথি জয় তার ( দ্যা নিউরো সাইকো সোশ্যাল মডেল অফ কার্সিয়ং ) এই বইয়ে তিনি অভিশাপের একটি সুন্দর মডেল দিয়েছেন। যেখানে তিনটি বৃত্ত আকারে অভিশাপের আদ্যপান্ত বিবরণ দিয়েছেন। এই তিনটি বৃত্তের আলাদা আলাদা করে আমরা আলোচনা এবং উদাহরন দিয়ে বুজানোর চেস্টা করব। বন্ধুরা চলুন চিত্রটি আগে দেখে নিই একবার ভাল করে। 


অভিশাপ কি বাস্তবিক আছে নাকি কাল্পনিক

মস্তিস্ক - প্রথম বৃত্ত


এই তিনটি বৃত্তের মধ্যে উপরের যে বৃত্তটি দেখছেন এটি হচ্ছে মস্তিস্কের বৃত্ত। এটি হচ্ছে মস্তিস্ক উত্তপ্ত অধ্যায় থেকে নির্গত বাক্যবাণ। আপনি যখন রেগে যাচ্ছেন, তখন উত্তপ্ত মস্তিস্ক থেকে মনে করেন কাউকে আপনি অভিশাপ দিয়ে বসলেন। সেই অভিশাপ কিন্তু আপনার তেমন একটা কাজে আসে না। বা খুব কম সময়ে সেটার বাস্তব প্রতিফলন ঘটে। বেশিরভাগ অংশে কোন কাজে আসে না।
 
কেন আসেনা ? কারণ হচ্ছে এইটা উত্তপ্ত মস্তিস্ক থেকে নিক্ষিপ্ত বাক্যবাণ। সেখানে মন কিন্তু অনুপস্থিত। মন না থাকার কারণে সেটা বেশিরভাগ অংশে কোন কাজে লাগে না। অর্থাৎ এই প্রথম বৃত্ত থেকে যে অভিশাপটা আপনি দিলেন সেটা কিন্তু উত্তপ্ত মস্তিষ্কের নিক্ষিপ্ত বাক্যবাণ। সেখানে কিন্তু মন নেই মনের কার্জকলাপ তেমন নেই। তাই ওই অভিশপটা মন থেকে আসে নাই।

অভিশাপ কি বাস্তবিক আছে নাকি কাল্পনিক

তাই এখানে এই অভিশাপ তেমন কোন ফলপ্রসু হয় না। একটি উদারণের মধ্যে দিয়ে আমরা প্রথম বৃত্তের কথাগুলি উপলব্দি করি চলুন। ছোট কালে আমরা যখন খুব দুস্টুমি করতাম লেখাপড়া একদম করতে চাইতাম না বা পরীক্ষায় ফেল করি তখন কিন্তু আমাদের মা আমাদের রেখে গিয়ে অনেক অভিশাপ দিতেন যে তুই আর কখনো পাশ করবি না বা ফেল করবি তুর থেকে অমুকের ছেলে ভাল করছে। তুই একদম বরবাদ হয়ে যাবি। হাবি যাবি অনেক কিছু বলতেন।

বাস্তবে কিন্তু এই অভিশাপ বা কথা গুলি আমাদের বাস্তব জীবনে প্রতিফলিত হত না। কারণ তখন সেই অভিশাপ বা কথা গুলি উত্তপ্ত মস্তিস্ক থেকে বের হওয়া বাক্য। তারা আসলে আপনাকে মন থেকে কোন অভিশাপ আসে নি ।আর কোন বাবা মা ই কোন সন্তান কে মন থেকে অভিশাপ দেয় না । যা ফলপ্রসূ হওয়ার কোন চাঞ্জ নেই। এইটা আসলে শুধু বাবা মার ক্ষেত্রে নই ।কোন গুরুজনরা ই এই অভিশাপ দিলে কাজে আসে না ।কারন গুরুজনরাও মন থেকে ছোট দের অভিশাপ দেয় না ।

ন - দ্বিতীয় বৃত্ত


মন বা দ্বিতীয় বৃত্ত হচ্ছে মনের আবেগ নির্ভর অধ্যায় বা সাইকো পর্যায়ের অধ্যায়। অর্থাৎ এইটাতে মন ঘটিত কারণ থাকে তাই এইটা কম্পারেটিভলি রিস্কি। (তুলনামূলক ঝুঁকিপূর্ণ ) এই বৃত্ত থেকে মানে, মন বা সাইকো নামক বৃত্ত থেকে যখন মানুষ কাউকে অভিশাপ দেয় তখন কিন্তু সেটা ৫০ শতাংশ কাজ হয়। কারণ আমি ৫০ শতাংশ কেন বলছি সেটা একটু লক্ষ্য করুন। 

অভিশাপ কি বাস্তবিক আছে নাকি কাল্পনিক

আমাদের মধ্যে দেখবেন কিছু মানুষ আছে তারা কিন্তু অতিমাত্রায় ইমোশনাল বা আবেগী। তারা কিন্তু কথায় কথায় মানুষকে অভিশাপ দিয়ে থাকেন। একটু মনের আঘাত পেলে ই তারা অভিশাপ দিয়ে থাকেন। এই সমস্ত ইমোশনাল মানুষগুলির অভিশাপ সারাদিনে একশটা অভিশাপ দিলেও একটু অভিশাপ লাগবে না।  

কারণ কেন আমি বলি কারণ হচ্ছে সে যে সময় আপনাকে অভিশাপ দিয়েছেন সেই সময় কিন্তু তার মস্তিস্ক কাজ করে নি। হ্যা সে কিন্তু মস্তিস্ক দিয়ে কারো দেওয়া কথা বা আঘাতটা বিবেচনা করে নি সেখানে তার মস্তিস্ক অনুপস্থিত।তাই এই সমস্ত মন নির্ভর মানুষ গুলির অভিশাপ তেমন কোনো কাজে আসে না। 

যদি সে নিজের মস্তিস্ক দিয়ে আগে বিবেচনা করত বা বুজতে পারতো বা মস্তিস্ক কাজে লাগতো তাহলে হয়ত সেই ক্ষেত্রে তার অভিশাপ কাজে আসত। কিন্তু এখানে ৫০ শতাংশ কাজে লাগত বলেছিলাম এই কারনে যে, এখানে মন যেহেতু একটা বড় অধ্যায় তৈরি করে সেহেতু মনের উপর পড়া আঘাত যদি মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে তখন কিন্তু বেশিরভাগ মানুষের অভিশাপ কাজে আসে।  

সমাজ - তৃতীয় বৃত্ত 

এই বৃত্তটি হচ্ছে সমাজ নির্ভর অধ্যায় বা বৃত্ত। এই বৃত্তটি তে যে মানুষগুলি নির্ভর করে তারা কিন্তু খুব বিপদজনক জায়গায় থাকেন। এটি খুব রিস্কি একটি জায়গা। এই বৃত্তের মানুষগুলি যে অভিশাপ দিয়ে থাকেন তাদের কিন্তু খুব বেশি অংশ অভিশাপ প্রতিফলিত হয়। এখানে কারা বসবাস করেন যারা সমাজ কাঠামোতে বসবাসকারী, যেমন যারা খুন করেন প্রতারণা করেন বা মানুষকে ঠকান।

অভিশাপ কি বাস্তবিক আছে নাকি কাল্পনিক
 
তাদের দ্বারা যদি কোন সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন ওই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা যে অভিশাপ প্রদান করেন বা অমঙ্গল কামনা করেন তখন কিন্তু সেটা শতকরা ৮০ ভাগ প্রতিফলিত হয় বা অভিশাপ লাগে। যেমন তার একটি উদাহরণ দেওয়া যাক। 

একজন দম্পতি যেখানে স্ত্রী হচ্ছে ভীষণ রকম নিরীহ আবার স্বামী হচ্ছেন খুব বেশি পরকীয়ায় লিপ্ত। দেখুন এখানে কোনোদিন যদি ওই নিরীহ স্ত্রী তার স্বামীর পরকীয়া দেখেফেলেন বা সেই নিজের স্বামী পরের সাথে পরকীয়া করছে এই অবস্থায় দেখেন। তখন ওই স্ত্রীর মনে যে আঘাত তিনি পাবেন ওই আঘাতের ফলে যে বাক্য বা অভিশাপ নিঃসরণ হবে। সেটি কিন্তু বেশির ভাগই প্রতিফলিত হবেন। 

আরো বলা যায় যেমন, একজন ধনী মানুষের বাবা মা তাদের ছেলে কিংবা ছেলের বউয়ের কাজ থেকে দীর্ঘদিন অবহেলা সহ্য করে। সেই অবহেলা সহ্য করতে করতে যখন অসহনীয় পর্যায়ে চলে যায় তখন তাদের মন থেকে যে দীর্ঘনিশ্বাস পড়ে  তা কিন্তু বেশিরভাগই অভিশাপে প্রতিফলিত হয়। তাই এই বৃত্তের মানুষের অভিশাপ কিন্তু খুব রিস্কি। 

সংযোগ স্থল - কালো চিহ্ন 


সংযোগ স্থল বা কালো চিহ্ন এইটা হলো একদম শেষ পর্যায়। যেখান থেকে মানুষ যদি কোন অভিশাপের বাক্য বের করে তখন কিন্তু রেহাই পাওয়ার কোন উপায় আর থাকে না। তাহলে কিভাবে হয় সেটা বা সেখানে কারা থাকেন সেটা একটু বুজে আসি। 

অভিশাপ কি বাস্তবিক আছে নাকি কাল্পনিক

মনে করেন সামাজিক প্রেক্ষাপটের মানে ( তৃতীয় বৃত্ত) কোন মানুষ যদি ভীষণ কোন আঘতের ফলে মন ( দ্বিতীয় বৃত্ত ) এবং মস্তিষ্ক (প্রথম বৃত্ত) একাগ্র করে কাউকে মনের গভীর অবস্থা থেকে অভিশাপ দেয়। তাহলে মনে করবেন এই শ্রেণীর মানুষগুলি ওই কালো বা সংযোগ স্থলে অবস্থান করে।
 
তার মানে হলো এই কালো সংযোগ স্থলের কোন সামাজিক মানুষ যখন গভীর আঘাত থেকে প্রাপ্ত কাউকে মন এবং মস্তিষ্কের একাগ্রতা থেকে দীর্ঘনিশ্বাস বা অভিশাপ দেয় তাহলে তার মানে গভীর আঘাত দানকারী মানুষটির আর রেহাই থাকে না। বা তাকে শতভাগ অভিশাপ ভোগ করতে হয়। 

অভিশাপ থেকে বাঁচার ১০ টি উপায়


অভিশাপ কি বাস্তবিক আছে নাকি কাল্পনিক
  1. অভিশাপ থেকে বাঁচার প্রথম উপায় হল আপনি কাউকে অভিশাপ দেওয়া থেকে বিরত থাকুন । কাউকে অভিশাপ দেবেন না । সহ্য করতে শিখুন।
  2. অভিশাপ বিষয়টি সিরিয়াস নিবেন না । কিছু মানুষ আছে যারা অভিশাপ নিয়ে এতই সিরিয়াস হয়ে পড়েন যে, অভিশাপ কথাটি শুনলেই তাদের হাত পা কাঁপতে শুরু করে ।এইটা কিন্তু একদম করা যাবে না । এর ফলে অনেক কথিত ভন্ড বাবা দের দ্বারস্ত হই । তাদের কে অনেক কিছুই দান করে থাকি ।এইটা কিন্তু একদম ঠিক না । অভিশাপে অবসেসড হওয়া যাবে না । 
  3. সবার সাথে যৌক্তিক সম্পর্ক রাখুন ।কারো সাথে গভীর সম্পর্ক তৈরি করবেন না । মনে রাখবেন যখন কারো সাথে গভীর সম্পর্কে জড়াবেন তখন উভয়ের পার্টিকেল আকর্ষন থাকবে তুঙ্গে । এতে করে একজন আরেকজনের অহেতুক দাবি ও বেড়ে যায় । যদি এই দাবি কখনো ছন্দ পথন হয়ে যায় তাহলে সেইখান থেকে অভিশাপের তৈরি হয় । যার মাত্রা থাকবে অনেকগুন ।
  4. সামাজিক অপরাদ থেকে বিরত থাকুন । সেটা যে ধরনের ই হোক না কেন। কারো কাছে নিজেকে প্রকাশ করবেন না । কিছুটা গোপন রাখুন। যাতে করে আপনার সম্পর্কে পুরো ধারনা না পায় ।  মনে রাখবেন ধারনা করা যায় না তাকে অভিশাপ দেওয়া যায় না।
  5. সন্মান অনেক বড় জিনিস । তাই পৃথীবির সবাইকে সন্মান করুন ।সেটা হোক মানুষ, পশু-পাখি , গ্রহ-নক্ষত্র যাই হোক । আর নিজের ধর্মকে তো সন্মান করবেনই অপরের ধর্মকেও সন্মান করবেন । সন্মান ছড়িয়ে দিন চারপাশে। মনে রাখবেন যিনি সন্মান করতে জানেন তিনি কিন্তু মানুষের ভালবাসার পাত্র হয়। আর ভালবাসার মানুষকে কেউ অভিশাপ দেয় না । বা দেওয়া যায় না ।আপনি বেঁচে যাবেন ।
  6. ভুল বা অপরাধ করে থাকলে তার জন্যে অনুতপ্ত হতে পারেন । কিন্তু ভেঙ্গে পড়বেন না । পৃথীবিতে এমন অনেক খারাপ মানুষ আছে  যারা নিজেদের অতি আত্মবিশ্বাসের সাথে নিরীহ ভাবতে পারেন ।
  7. দেখা গেছে তাদের আত্মবিশ্বাস ই তাদের সেইফ করেন । অপরাধ করে ফেললেও আত্মবিশ্বাস হারাবেন না । মনে রাখবেন প্রতিটি ভুলের ই ক্ষমা আছেন । 
  8. নিজের আত্মা বা সোলকে একদম রিফ্রেশ রাখুন । আর এই আত্মাকে পরিস্কার রাখতে হলে বা রিফ্রেশ রাখতে হলে ধর্ম চর্চা এবং আধ্যাত্মিক সাধনা কাজে আসে । তবে একটি কথা বলে রাখা ভাল যে, ধর্ম চর্চার ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি থেকে দূরে থাকবেন । কারন বিভ্রান্তি মানুষকে ধর্মান্ধ করে ফেলে ।
  9. সময় পেলে নিজেকে একটু পাহাড় কিংবা সাগর থেকে ঘুরিয়ে আনুন । কারন এই দুই জায়গায় আপনি যে পরিমান পজিটিভ এনার্জি পাবেন এই পৃথীবি নামক গ্রহতে আপনি আর কোথায় পাবেন না ।
  10. প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে নিজে শতবার বলুন যে আমি নিরীহ আমি নিরাপরাদ। এটি বলতে বলতে ধীরে ধীরে বিশ্বাসে পরিনত হবেন। অভিশাপের আগুন সব কিছুকে পোড়াতে পারলেও বিশ্বাসকে কখনো পোড়াতে পারেনা ।

অভিশাপ নিয়ে শেষ কথা

অভিশাপ কি বাস্তবিক আছে নাকি কাল্পনিক এই নিয়ে অনেক কথা হয়ে গেছে। এক সময়ের কাল্পনিক একটা বাক্য , যা আমরা কখনো বিশ্বাস করেছি আবার কখনো বিশ্বাস করিনি। কিন্তু এই আর্টিকেলে আমরা চেষ্টা করেছি বৈজ্ঞানিক ভাবে সেই অভিশাপের আদ্যপান্ত তুলে ধরার জন্যে। আশা করি এই ব্লগটি পড়লে অভিশাপ নিয়ে আর কারো মনে কোন দ্বিধা দ্বন্ধ থাকবেনা ।  

অভিশাপ সম্পর্কে উদাহরণ দেওয়ার চেষ্টা করেছি যা আমরা বাস্তবিক জীবনে দেখেছি, শুনেছি এবং আমাদের জীবনে যা প্রতিফলিত হয়েছে তা নিয়ে। তাই অভিশাপ নিয়ে আর সন্দেহ থাকার কথা নই। এখন আমরা বলতে পারি অভিশাপ বাস্তবিক এবং এইটার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি বা ব্যাখ্যা রয়েছে যা কাল্পনিক নই ।  ভাল থাকবেন ,সুস্থ থাকবেন , নিজের খেয়াল রাখবেন। যেন কারো অমঙ্গল চিন্তা করবেন না। ধন্যবাদ। 

সচরাচর জিজ্ঞাসা (FAQ)


অভিশাপ বলতে কি বোঝায়?

অভিশাপ হচ্ছে একজন ব্যক্তিকে বিনা কারণে মানসিক বা শারীরিক আঘাত দেওয়ার মাধ্যমে, আঘাতপ্রাপ্ত ব্যাক্তির মন ও মস্তিক থেকে নির্গত দুঃখজনক বাক্যবাণ। যে বাক্যবাণ আহতকারীর বিনা কারণের প্রাপ্ত ফলাফল। 


অভিশাপ কিসের উপর ভিত্তি করে?

অভিশাপ বিশেষ করে মানুষের মনের উপর ভিত্তি করে হয়। তবে মানসিক আঘাতের সাথে শারীরিক আঘাত ও নির্ভর করে। 


অভিশপ্ত ব্যক্তির অভিশাপ থেকে বাঁচার উপায় কি?

সব ভুলের ক্ষমা হয়। তাই অভিশপ্ত ব্যক্তি অভিশাপ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হচ্ছে অনুতপ্ততা। যে অভিশপ্ত হয়েছে সে যদি তার কৃত কর্ম নিজে অনুভব করতে পারে বা সে যদি নিজে নিজে অনুতপ্ত হয় তাহলে সে অভিশাপ থেকে বাঁচতে পারে। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪