স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ঘরোয়া ঔষধ
আজকে এমন একটি বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করতে যাচ্ছি যা প্রত্যেক মানুষের জন্যে প্রয়োজনীয়। এতক্ষনে টাইটেল দেখে বুজতে পেরেছেন কি নিয়ে আলোচনা করব। হ্যা আমরা স্মৃতিশক্তি নিয়ে কথা বলছি। অনেকে তাদের স্মৃতিশক্তি নিয়ে বিশেষ চিন্তায় থাকেন।আজকে এই স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ঘরোয়া ঔষধ কি এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির খাবার কি ?
কোন ফল খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির কৌশল, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ব্যায়াম,স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির হোমিওপ্যাথিক ঔষধ, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির আয়ুর্বেদিক ঔষধ এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির মন্ত্র কি এই সব কিছু বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করবো এবং চেষ্টা করবো আপনার সমস্যা সমাধানে সর্বোচ্চটা দেওয়ার। কিভাবে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করা যায় ।তাহলে আর দেরি কি ? আপনাদের সঙ্গে নিয়ে আরো এগিয়ে যায় ।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ঔষধ
আজকে এই ব্লগে সম্পূর্ণ স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করবো। তারমধ্যে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ঔষধ সম্পর্কে আমরা আলোচনা করার চেষ্টা করবো, বন্ধুরা আশা করি সাথে থাকবেন। একটি কথা না বললেই নই। এই স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির প্রথম এবং প্রদান ঔষধ হলো মেডিটেশন।
আপনি যতবেশি মেডিটেশন করবেন ততবেশি স্মৃতিধর হবেন এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে পারবেন। তবে ডাক্তারি বিদ্যায় ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্যে ঔষধ রয়েছে। অনেক মানুষের স্মৃতিশক্তি কম সময়ে হ্রাস পায়।
তাদের জন্যে প্রথম পছন্দের চিকিৎসা হিসেবে "কোলিনস্টেরেজ ইনহিবিটর" ( ডনপেজিল, রিভাস্টিগমাইন ) এবং মেম্যান্টাইনের এর মত ঔষধ গুলি দিয়ে থাকে। এটি স্মৃতিশক্তির অবস্থান বুজে ডোজ দিয়ে থাকেন। এই ঔষধ স্মৃতিশক্তির জ্ঞানীয় চিন্তা শক্তি গুলি বৃদ্বি করার জন্যে এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে দিয়ে থাকেন । চলুন আমরা আরো গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করি ।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ঘরোয়া ঔষধ
মানুষের সবচেয়ে স্মৃতিশক্তির কেন্দ্র হচ্ছে তার নিজের ঘর। এবং সাথে ভাল আহার , নিয়মিত ঘুম এবং ভাল শিক্ষা লাভ করা। যে শিক্ষা আপনার মন ও মস্তিস্ক ভাল পথে পরিচালনা করে। ভাল কিছু চিন্তা করা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করার একটি উপায়।
তাছাড়া ও ঘরোয়াভাবে অনেক প্রকার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ঔষধ হিসেবে ভেষজ ব্যবহার করতে পারেন। যেমন আপনি স্মৃতিশক্তি বাড়াতে ঘি খেতে পারেন এর সাথে অশ্বগন্ধা, স্মৃতি এবং বাকোপা ও নিয়মিত ব্যবহার করলে আপনার স্মৃতিশক্তি অনেক গুনে বৃদ্বি হতে পারে ।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির খাবার - কোন ফল খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে
প্রতিটা মানুষের শরীর থেকে শুরু করে সব কিছু গঠন হয় এই খাবার এর ফলে। ভাল খাবার আপনার জীবনে একটি আমূল পরিবর্তন আনতে পারে। সেটা হোক শরীরিক এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে। খাবার আমাদের এই মানব দেহ গঠন করে তুলার জন্যে সর্বোচ্চ দায়ী।
অ্যান্টিঅক্সিজেন সমৃদ্ব খাবার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্যে খুব বেশি দায়ী। ভাল ফল খাওয়া ও আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্যে গুরুত্বপূর্ণ। চলুন তাহলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্যে কি কি খাবার আমাদের প্ৰয়োজন এবং কোন ফল খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে সেইদিকে একটু আলোচনা করি।
কোন ফল খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে
প্রতিদিন আমরা কত রকমের ফল মূল খেয়ে থাকি। কিন্তু মস্তিস্ক বিকাশের বা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্যে কোন ফল আমাদের বেশি প্রয়োজন সেটা আমরা একটু গভীর ভাবে আলোচনা করি।
আপেল
মনে রাখবেন মিষ্টি জাতীয় খাবার হচ্ছে মস্তিষ্কের আহার। তার মধ্যে আপেল হলো কোয়ারসেটিন নামক অ্যান্টিঅক্সিজেন থাকার কারণে আপেল খুব ভাল একটি ফল স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্যে। কারণ আপেলের গুন্ হিসেবে মস্তিষ্কের নিউরোনের কাজ করার শক্তি জোগায়। তাই স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্যে নিয়মিত আপেল খেতে পারেন।
কমলালেবু
কমলালেবু আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্যে এবং মস্তিষ্কের ক্ষমতা বজায় রাখার জন্যে অনন্য ভূমিকা পালন করে। কারণ এতে রয়েছে ভিটামিন সি। মনোযোগ বৃদ্বি, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি এবং সিদ্বান্ত নেওয়ার গতিকে বৃদ্বি করতে সহায়তা করে। তাই কমলালেবু স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্যে নিত্যদিন খেতে পারেন ।
কুমড়ার বীজ
ভিবিন্ন রকম রাসায়নিক উপাদান যেমন আয়রন, কপার, ম্যাগনেশিয়াম এবং জিংক কুমড়ার বীজের মধ্যে বিদ্যমান। এই সব গুলি উপাদান আপনার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে এবং সাথে সাথে বিষণ্ণতা, মৃগীরোগের এবং মাইগ্রেনের সমস্যার ঝুঁকি কমায়। তাই আপনি মাজের মধ্যে এই কুমড়ার বীজ খেতে পারেন ।
ব্লুবেরি
এই ফলেও অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যা মস্তিষ্কের এবং আপনার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্যে খুব উপকারী একটি ফল। বিশেষ করে মস্তিষ্কের প্রদাহ কমাতে এটি বেশি জরুরি। এটি আপনি প্রতিদিন সকালে কয়েকটা করে খেতে পারেন ।
বাদাম
বাদামের কথা কি আর বলব ? প্রায় সব মানুষেই অবসর সময় পার করার জন্যে বাদাম কে পছন্দ করে থাকেন। যদিও এটি অবসর সময় আমরা খায় কিন্তু এতে প্রচুর পরিমান স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্যে ক্ষমতা রয়েছে। বাদাম একটি দামি খাবার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্যে। ২০১৪ সালে এক গবেষণায় প্রকাশ করেছেন, যারা দীর্ঘদিন ধরে এই বাদাম খায় তাদের স্মৃতিশক্তি খুব প্রবল থাকে।
আরও পড়ুন ঃ
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির কৌশল
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্যে আমরা কিছু কৌশল অবলম্ভন করতে পারি। শুধু খাবার এবং অন্যান্য ভাবে যেমন স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করা যায় তেমন কিছু কৌশলের মাধ্যমে আমরা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে পারি। যেমন ঃ
কোন সুর বা গান শুনার মাধ্যমে। কারণ সুর মানুষের মনকে এক জায়গায় করে এবং ভাবের সৃষ্টি করে। এই কৌশলের মাধ্যমে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
আপনি যখন বিশ্রাম করেন তখন বিশ্রামে গিয়ে বা বিছানায় শুয়ে শুয়ে আপনার সমস্যা গুলি সম্পর্কে একটু চিন্তায় মগ্ন হন। এতে করে শীতল মস্তিস্ক আপনার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্যে উপকার করবে।
খাবার খাওয়ার সময় আপনার খুব পছন্দের খাবার টি খুঁজে নিন। এতে মস্তিস্ক একটু রিলেক্স থাকে। তাই আপনার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
মনকে নিয়ন্ত্রণ করুন। বিচ্ছিন্ন ছুটাছুটি মনকে আপনার নিয়ন্ত্রণে আনার জন্যে কিছু নাম্বার গুনা শুরু করুন। অথবা কোনো একটু বস্তু কে দৃষ্টি দিয়ে অনেকক্ষন তাকিয়ে থাকুন যতক্ষন না আপনার চোখে পানি না আসে। এতে করে আপনার মন স্থির ও হবে স্মৃতিশক্তি ও বৃদ্বি পাবে।
প্রতিদিন নতুন নতুন কিছু করার জন্যে চেষ্টা করুন। এতে করে আপনার স্মৃতিশক্তি একটু নতুন রূপ পাবে এবং বলশালী হবে।
এইগুলি সব হলো কৌশল, যা আপনার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্যে খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনি প্রতিদিন করে ১ বার বা দুই বার চেষ্টা করতে করতে স্মৃতিশক্তির বৃদ্বি হবে।
ঔষধ হিসেবে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ব্যায়াম
ব্যায়াম মানুষের শরীর, মন এবং সর্বোপরি মস্তিষ্কের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিয়ম অনুসারে প্রতিটা মানুষের গড়ে ২০ থেকে ৩০ মিনিট করে সপ্তাহে ৫ দিন নিয়মিত ব্যায়াম করা প্রয়োজন। কারণ এটি আপনার জীবনের সমস্ত কিছুকে আমূল পরিবর্তন করে দিতে পারে।
ব্যায়ামের মধ্যে সাইকেল চালানো, হাঁটা সাঁতার কাটা এবং সর্বোপরি যোগাসন এই গুলি সব। এইগুলির মধ্যে বিশেষ করে যোগাসন স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ব্যায়াম হিসেবে বেশি কাজ করে । আবার যোগাসন এর মধ্যে আপনি যতবেশি মেডিটেশন করবেন তত বেশি আপনার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
কারণ এটি মানুষের মনসংযোগ করে বেশি। মনোসংযোগ বেশি হলে আপনা আপনি স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি হয়ে যায়। তাই আমি মনে করি মানুষের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্যে মেডিটেশন করা এবং যোগাসন করা ব্যায়ামের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির হোমিওপ্যাথিক ঔষধ
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্যে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ রয়েছে অনেক রকমের। সেইগুলি আপনি চাইলে সেবন করতে পারেন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে। আমরা সেই হোমিওপ্যাথিক ঔষধ গুলি সম্পর্কে একটু পড়ে আসি বন্ধুরা । যেমন ঃ
হেরিবোরাস নাইজার, এনাকার্ডিয়াম, মেডোরিনাম, ক্যালি ফস, এম্ব্রাগ্রেসিয়া এবং ক্যানাবিস ইন্ডিকা।
এইগুলি সব হচ্ছে হোমিওপ্যাথিক ঔষধের মধ্যে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্যে ভাল কাজ করে। এবং এই ঔষধ সেবনে আপনার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি হবে তাড়াতাড়ি। তাই চাইলে আপনি ভাল একজন হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে এই ঔষধ গুলি খেতে পারেন।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির আয়ুর্বেদিক ঔষধ
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বিদ্যার মধ্যে আয়ুর্বেদিক ঔষধ আমাদের জীবনে অনেক আগে থেকেই চলে আসছে এই চিকিৎসা জগতে। তখন কার দিনে আমাদের বেশির ভাগ চিকিৎসা সার হত এই আয়ুর্বেদিক ঔষধে। তখন ও মানুষ এই আয়ুর্বেদিক ঔষধ খেত স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্যে।
এই আয়ুর্বেদিক ঔষধ গুলি আমরা হাতের নাগালে পাই। কিন্তু জানিনা বলে সেগুলিকে আমরা বেশি গুরুত্ব দিয় না। কিন্তু এই আয়ুর্বেদিক ঔষধ গুলি যদি আমরা একটু জেনে রাখি, তাহলে আমাদের আরো আগ্রহ বেড়ে যাবে এই স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্যে।
যেমন কিশমিশ, খেজুর, অলিভ অয়েল, বাদাম , ঘি, আখরোট এবং কালো মরিচ এই সব গুলি আসলে একেকটা আয়ুর্বেদিক ঔষধ। আমরা যদি এইগুলি জেনে বুজে আহার করি তাহলে আমাদের মধ্যে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে আর দুশ্চিন্তা করতে হবে না। তখন আমরা একটু নিয়মিত এবং পরিমিত উপরিউক্ত সব গুলি উপাদান স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্যে আহার করতে পারি ।
শেষ কথা
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ঘরোয়া ঔষধ হিসেবে আমরা অনেক কিছু আলোচনা করেছি। মনে রাখতে হবে উপরে বর্ণিত আলোচনা গুলি হলো একেকটা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্যে একেকটা শক্তি। আশা করি বন্ধুরা, চেষ্টা করেছি আপনাদের চাহিদা পূরণ করার জন্যে এই স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ঘরোয়া ঔষধ সম্পর্কে। ভাল থাকবেন সুস্থ থাকেবন ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url