মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায়
তাই মোবাইল ফোনের ক্ষতির দিক থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে আমরা আজকে আপনি আর আমার মধ্যে একটু আলোচনা করবো। শুধু কি ক্ষতির দিক আলোচনা করবো? না। অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক, অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলাফল, মোবাইল ফোন ব্যবহারে শিশুদের যে ক্ষতি হতে পারে, ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা এবং দিনে কত ঘন্টা মোবাইল চালানো উচিত এই সব সম্পর্কে আমরা আজকেধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো।
মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক গুলো কি কি
স্বাস্থ্যের অবনতি
মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিকগুলির মধ্যে স্বাস্থ্যের অবনতি এটি প্রদান। কারণ মনে রাখতে হবে স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। প্রতিদিন এই মোবাইল ব্যবহার করার ফলে আমাদের মস্তিষ্কের মধ্যে মোবাইল ফোনের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন একটু একটু করে খুব ক্ষতি সাধন করে যা আমাদের মস্তিষ্কে টিউমার হওয়ার জন্যে দায়ী। এবং তাছাড়া দীর্ঘস্থায়ী মোবাইল ব্যবহারে মানুষের অনেক ক্ষতি করে । যেমন ঃ
চোখের দৃষ্টি শক্তির ক্ষতি
শ্রবণশক্তি কমে যায়
চিন্তা শক্তি কমে যায়
অনিদ্রা
কাজ ও পড়ালেখায় মন না বসা
নিত্যদিন মোবাইল ফোন ব্যবহারে পড়ালেখায় মন বসে না। কারণ তখন মন মোবাইল ফোনে সংযোগ থাকে। এবং যারা বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকত তারা মোবাইল ফোনে আসক্তির কারণে কাজে মন বসে না। প্রতিদিন মোবাইল ফোন চালালে মোবাইল ফোনের প্রতি একটা আসক্তি জন্মে।
সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব
মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক গুলির মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে হচ্ছে আমাদের সম্পর্কের উপর। আমরা মোবাইল ব্যবহার করার আগে, আমাদের মধ্যে বন্ধু বান্ধব বলেন আত্মীয় স্বজনের মধ্যে যে একটা গভীর ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল সেটা কিন্তু আমরা একমাত্র এই মোবাইল ফোন ব্যবহার করার ফলে প্রভাব তৈরী হয়েছে।
কারণ আমাদের বর্তমানে মোবাইলের প্রতি যে আসক্তি তৈরী হয়েছে। সেই আসক্তি থেকে বের হতে না পারায় এখন আমরা কাউকে সময় দিতে পারি না।যার কারণে সম্পর্কের মধ্যে একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এটিও কিন্তু মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক ।
পর্নো আসক্তি
ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার ঝুঁকি
ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার ঝুঁকি তো রয়েছে এই মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিকগুলির মধ্যে। আমরা অনেক সময় ব্যক্তিগত অনেক তথ্য শেয়ার করি আমাদের নিজেরদের মানুষের মধ্যে। সেই ব্যক্তিগত তথ্য গুলি কারো না কারো ফাঁদে পড়ে আমাদের গোপনীয়তা তথ্যের দেওয়াল ভেঙ্গে ভাইরাল করে দিচ্ছে।
নিরাপত্তার বেষ্টনী ভেঙ্গে বিভিন্ন রকম সাইবার হ্যাকারদের হাতে আমাদের ব্যক্তিগত গোপনীয় মেসেজ, ছবি অথবা ভিডিও নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করছে। এই সমস্ত কিছু আমাদের মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক ।
সময় নষ্ট করা
আমরা জানি সময় কারো জন্যে অপেক্ষা করে না। বর্তমানে ছোট শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ব পর্যন্ত সবার হাতে এই মোবাইল ফোন দেখতে পাবেন। সবাই কেমন জানি যান্ত্রিক হয়ে গেছে। এখন পড়ালেখা করা ছেলে মেয়েরা পড়ালেখা করার সময় মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকেন যা সময় নষ্ট করে। এটিও মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক। ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা সময় নষ্ট করছে এই মোবাইল ফোন ।
মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায়
অনেকক্ষন ধরে আমরা মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিকগুলি আলোচনা করেছি। এখন মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে একটু দৃষ্টিপাত করি। চলুন লিস্ট আকারে আমরা সেই কথা গুলি নির্ণয় করি।
প্রথমে মোবাইল ফোন কিনার সময় দেখে নিতে হবে যে কোন মোবাইল ক্ষতিকারক ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন কম নির্গত হয় সেই মোবাইল দেখে ক্রয় করা।
চোখে অবশ্যই ব্লুকাট চশমা পরিধান করা ।
ব্যাক্তিগত তথ্য শেয়ার থেকে বিরত থাকা। শেয়ার করলেও যেন খুব সাবধানতা বজায় রাখা ।
গভীর রাত পর্যন্ত মোবাইল ফোন দেখা থেকে বিরত থাকা।
রাস্তা পারাপার হওয়ার সময় অযতা মোবাইল ফোন ব্যবহার করা থেকে নিজেকে রক্ষা করা।
আপনার মোবাইল ফোনের অপ্রয়োজনীয় নোটিফিকেশন আসা থেকে মোবাইলকে কাস্টমাইজ করে নেওয়া।
আপনার পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবদের সময় দেওয়া।
প্রয়োজনীয় বা খুব কাছের মানুষ ছাড়া অপরিচিত মানুষদের সাথে সম্পর্ক তৈরী করা থেকে বিরত থাকা।
মোবাইল ফোন ব্যবহার করলেও একটা নির্দিষ্ট সময় পরিমাপ করে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা।
বিশেষ করে শিশুদের থেকে বা কিশোর কিশোরীদের হাতে মোবাইল দেওয়া থেকে বিরত থাকা।
উপরে বর্ণিত এই সমস্ত তথ্য গুলি যদি পালন করতে পারে তাহলে মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায় আপনি আশা করি খুঁজে পাবেন। তাই চলুন এই বাকিগুলি নিজের জীবনে প্রয়োগ করি এবং মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থাকে বাঁচার চেষ্টা করি ।
মোবাইল ফোন ব্যবহারে শিশুদের ক্ষতিকর দিকগুলি কি ?
মোবাইল ফোন ব্যবহারে শিশুদের অধিক পরিমানে ক্ষতি হতে পারে বলে সাবধান করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তার মধ্যে বিশেষ করে এক থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে তো একটু বেশি। যেমন এই বয়সের শিশুদের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে আচরণগত সমস্যা হতে পারে ।
তারপর দেরিতে কথা বলা এবং মনোযোগের ক্ষতি হতে পারে। আরো অধিক প্রকারে ক্ষতি হতে পারে শিশুদের এই মোবাইল ফোন ব্যবহার করার ফলে। তাছাড়াও চোখের রেটিনার ক্ষতি হয় মস্তিষ্কের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। আবার অনেক শিশুরা অটিজমে আক্রান্ত হচ্ছে ।
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা
মোবাইল ফোনের ক্ষতি দিকগুলির মধ্যে ছাত্র জীবনে মোবাইল ব্যবহার করাটা একটি অন্যতম দিক। ছাত্র জীবনে মোবাইল ব্যবহার করলে ছাত্রদের গেমসের প্রতি আসক্তি জন্মে। পর্নো আসক্তি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। বিভিন্ন রকম মন্দ কথাবার্থায় জড়াতে পারে। বিভিন্ন রকম ক্রাইম এর সাথে সম্পৃক্ত হতে পারে। আমি মনে করি ছাত্রের মোবাইল ফোনের বেশি দরকার নাই।
যেহেতু তার কাজ পড়ালেখা করা। তারপর বলব যদি অনলাইনে ক্লাস থাকে তা সাবধানতার সহিত পিতামাতাকে গাইড দিয়ে সেটি ব্যবহার করতে দেওয়া। অথবা পড়ালেখার সুবিদার্থে কোন pdf পড়ার প্রয়োজন হলে সেগুলি নিয়ে সে পড়ালেখা করতে পারে। তবে সর্বোপরি ছাত্র জীবনে মোবাইল ব্যবহার করা একটি মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক ।
আর পড়ুন ঃ
অ্যাপেল ওয়াচ এর দাম কত এবং অ্যাপল ওয়াচ ব্যবহারের সুবিধামোবাইল মাদারবোর্ড নষ্ট হওয়ার কারণ এবং লক্ষণ
দিনে কত ঘন্টা মোবাইল চালানো উচিত
একটি কথা মনে রাখবেন। প্রতিটা কিছু অতিরিক্ত ভাল নই। তবে পরিমিত ভাল। মোবাইল ও ঠিক তেমন করে একটি নির্দিষ্ট সময়ে বেঁধে নিয়ে পরিচালনা করতে হবে। গবেষণা করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন। দৈনিক একজন মানুষের ৩ ঘন্টা মোবাইল চালালে হয়ে যায়। এতে করে মনের এবং শরীরের উপর কোন ক্ষতিকারণ প্রভাব পরে না। এবং আপনার চোখের ও তেমন ক্ষতি হয় না ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url