জ্ঞান বিজ্ঞান কি ? জ্ঞান বিজ্ঞান অর্জনের উপায়

জ্ঞান বিজ্ঞান কি

পোস্টসূচীপত্র জ্ঞান বিজ্ঞান কি - মানুষের মধ্যে দিন দিন যত বেশি জানার চাহিদা বাড়বে তত বেশি মানুষ জ্ঞানী হবেন । এই জানার মাধ্যমটা যদি আরো গভীর হয় তখন মানুষ বিজ্ঞানে পদার্পণ করতে পারেন তাই এই জ্ঞান-বিজ্ঞান সম্পর্কে আমরা আরও অধিক আলোচনা করার চেষ্টা করব। যেমন জ্ঞান কত প্রকার ও কি কি? জ্ঞান এবং বিজ্ঞানের পার্থক্য কি ? জ্ঞান বিজ্ঞান বলতে কি বুঝায় ?

জ্ঞানের উৎস ও প্রকৃত জ্ঞান কি ? জ্ঞান ও বিজ্ঞানের প্রকারভেদ এবং জ্ঞানের অর্জনের উপায়, এই সমস্ত মাধ্যমগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করব এবং যথাসাধ্য আপনাদের উপকারে আসে এমন কথাগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করার চেষ্টা করব আশা করি আপনারা নিজেরাই জানতে পারবেন জ্ঞান-বিজ্ঞান কি ? 

জ্ঞান বিজ্ঞান কি  ?

জ্ঞান বিজ্ঞান সম্পর্কে সংক্ষেপে বলার চেষ্টা করবো। অজানাকে জানার নাম হলো জ্ঞান। আর এই জ্ঞানকে  বিশেষ ভাবে অর্জনের নাম হচ্ছে বিজ্ঞান। যেমন বৃক্ষ হলো জ্ঞান । আর একটি বৃক্ষের ডালপালা শাখা প্রশাখা গুলি হলো বিজ্ঞান ।

 

জ্ঞান কত প্রকার ও কি কি ?


জ্ঞান কত প্রকার?  জ্ঞান হলো দুই প্রকার একটি হল পরোক্ষ জ্ঞান আরেকটা হলো প্রত্যেক জ্ঞান পরোক্ষ জ্ঞান হল অপরের কাছ থেকে শুনেছেন অপরের কাজ থেকে জানার  মাধ্যমে আপনি জ্ঞান অর্জন করেছেন থাকে পরোক্ষ জ্ঞান বলে। যেমন আমরা ছোটকালে বইয়ে দুধ সম্পর্কে পড়েছি। দুধ দেখতে কেমন হয়। এর পুষ্টিগুণ কি ? এইটা হলো পরোক্ষ জ্ঞান।  


প্রত্যক্ষ জ্ঞান হল যা আপনি স্বচক্ষে দেখেছেন, বুঝেছেন, জেনেছেন তাকে প্রত্যক্ষ জ্ঞান বলে। যেমন আমরা পরোক্ষ জ্ঞানে দুধ সম্পর্কে জেনেছিলাম।  কিন্তু এখন আমরা দুধ দেখেছি । দুধের রঙ সাদা । এইটাকে প্রত্যক্ষ জ্ঞান বলে। 


এই দুই প্রকারে জ্ঞানকে বিবেচনা করা হয়। জ্ঞান থেকে বিজ্ঞান এবং এইভাবে মানুষ এক থেকে বহুকে জানতে পারেন বিজ্ঞানের মাধ্যমে। তাহলে চলুন একটু জ্ঞান বিজ্ঞানের পার্থক্য সম্পর্কে জেনে আসি ।


জ্ঞান ও বিজ্ঞান বলতে কি বুঝায় ?


জ্ঞান কি এবং বিজ্ঞান কি। জ্ঞান হলো অজানাকে জানার নাম জ্ঞান। আর সেই জানাকে বিশেষভাবে উপলব্দি করার নাম বিজ্ঞান।  আরো গভীরে আলোচনা করলে আমরা একটি উদাহরনের মাধ্যমে জানার চেষ্টা করব। 


জ্ঞান ঃ  আগের ছন্দে আমরা বলেছিলাম দুধ যখন আমি দেখেছি সেইটা হল জ্ঞান । কারন এইভাবে জ্ঞান কে জানতে হয় । এইবার আসি বিজ্ঞান সম্পরকে ।


বিজ্ঞান ঃ  ঐযে আমরা দুধ সম্পর্কে বলেছিলাম। এইবার এই দুধ আমরা নিজে খেয়ে দেখেছি।  দুধ সাদা হয় তার পুষ্টি কেমন। এর স্বাদ কেমন এই সব কিছু হলো বিজ্ঞান।  কারণ আমি এখন নিজে খেয়ে দুধের স্বাদ অনুভব করেছি । আমি বিশেষভাবে জ্ঞান অর্জন করেছি এই দুধ সম্পর্কে । তাই তাকে বিজ্ঞান বলে । 


তবে এই বিজ্ঞানের সংজ্ঞা মুখে বলার ভাষা নই । এটী একান্ত অনুভবের বিষয় ।কারন মানুষের মধ্যে জানার শেষ থাকে না । এখন জ্ঞান বিজ্ঞানের পার্থক্য সম্পর্কে একটু জেনে আসি ।


মানব জীবনে জ্ঞান বিজ্ঞান এর ভূমিকা


জ্ঞান বিজ্ঞান মানুষের জীবনে একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জ্ঞান বিজ্ঞান মানুষের জীবনে আলোর দিশারীর মত কাজ করে। মানুষের জীবনকে এই জ্ঞান বিজ্ঞান আলোকিত করে। এটি ছাড়া আপনি জীবন চালানো খুব কঠিন হতে পারে। 


জ্ঞান বিজ্ঞান কি


জ্ঞান মানুষের মনের আশ্রয় হিসেবে কাজ করে।  আর বিজ্ঞান মানুষের মনের প্রতিবেদন প্রকাশ করে। জ্ঞান এর দ্বারা মানুষের জীবনে সামাজিক ,ব্যক্তিগত কিংবা বুদ্বিমত্তা সম্পর্কে ধাৰণা দিয়ে থাকে। কিন্তু বিজ্ঞান আপনার পথ প্রদর্শক এবং মানব প্রকৃতি সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রদান করে। 


জ্ঞান মানব জীবনে অনেক কিছুই দর্শন দিয়ে থাকে। কিন্তু বিজ্ঞান তার বৈজ্ঞানিক প্রমানের মাধ্যমে সত্যকে অনুভূতি করে। মানুষকে জাগ্রত করে। সেটি হোক চিকিৎসা বিজ্ঞান হোক সেটি মহাজাগতিক বিজ্ঞান। 

আর পড়ুন ঃ


জ্ঞান এবং বিজ্ঞান-এর পার্থক্য কী ?


জ্ঞান ও বিজ্ঞান এই দুটির মধ্যে কিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় । তবে দুটিই অপরিভাষ্য বিষয়। 

জ্ঞান 
  • জ্ঞানের মাধ্যমে আপনি একটি চিত্রের কল্পনা করতে পারেন 
  • জ্ঞান দ্বারা আমরা ভুল কিছুও জানতে পারি। 
  • জ্ঞান জানার বিষয় 
বিজ্ঞান 
  • বিজ্ঞান সেই কল্পনা চিত্রের রূপ দিয়ে প্রমান করেন। 
  • বিজ্ঞানের দ্বারা চিরসত্য জানা যায়। 
  • বিজ্ঞানের প্রত্যক্ষ এবং প্রমান সাপেক্ষ  

জ্ঞানের উৎস কি কি 


জ্ঞানের উৎসের কোন পরিধি নাই। আমরা ছোট কালে কবিতা পড়েছি। "বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর সবার আমি ছাত্র। " সারা পৃথিবী আমার জ্ঞানের উৎস। সারা পৃথিবী কেন পৃথিবীর বাহিরে মহাকাশ ও আমাদের জ্ঞান বিজ্ঞান এর উৎস। তা আমরা এখন প্রত্যক্ষ করেছি আধুনিক বিজ্ঞানের দৌলতে। 


জ্ঞান বিজ্ঞান কি


তাছাড়া ও আমাদের জ্ঞান অর্জনের প্রধান উৎস অধ্যয়ন এবং অভিজ্ঞান। বিভিন্ন প্রকার বই পড়ার মাধ্যমে আমরা জ্ঞান অর্জনের উৎসকে খুঁজে পাই। কারণ বিভিন্ন রকম বিশ্লেষণ এবং পরীক্ষা মূলক অভিজ্ঞান গ্রন্থের মাধ্যমে লীপিবদ্ব হয়। 

তাই আমরা পুস্তক পাঠের মাধ্যমে এবং শিক্ষা প্রক্রিয়ার দ্বারা আমরা জ্ঞান অন্নেষণ করতে পারি। উৎস খুঁজে পেতে পারি। এবং নিজের ব্যক্তিগত অনুসন্ধানের মাধ্যমে ও জ্ঞান উৎস খুঁজে পাওয়া যায়। তবে মনে রাখতে হবে গভীর আগ্রহ ও ব্যাকুলতা থাকলে জ্ঞানের উৎস আপনা আপনি খুঁজে পাবেন। 


প্রকৃত জ্ঞান কি 


প্রকৃত জ্ঞান হলো সেই জ্ঞান, যে জ্ঞান শুধু নিজের জন্য চিন্তা না করে ভবিষ্যতের অপরের উপকারের চিন্তা করে যেই জ্ঞান চর্চা হয় তাকে প্রকৃত জ্ঞান বলে। যে জ্ঞান ভবিষ্যতে দেশের উপকারে আসবে।  যে জ্ঞানের দ্বারা মানুষের জীবন নির্বাহ হবে এবং মানুষের উপকার হবে। 


মানুষের জীবনযাত্রার মান আরো সহজ হবে সেটাকে আমি প্রকৃত জ্ঞান বলেই মনে করি। এখানে অনেকের প্রশ্ন থাকতে পারে তাহলে কি মানুষেরা সব সময় অপরের জন্যে জ্ঞান অর্জন করবে ? না, মনে রাখতে হবে জ্ঞান একটি পবিত্র বিষয়। যা সব সময় দেশের দশের চিন্তা করেই মানুষ করে থাকে। তাকে ই প্রকৃত জ্ঞান বলবে।

 

জ্ঞান ও বিজ্ঞানের প্রকারভেদ


জ্ঞান হলো মানুষের জানার উপর ভিত্তি করে কল্পনা এবং ধারণার উপর একটি চিত্রপট তৈরি করা। আর বিজ্ঞান হলো তথ্য ও তাত্ত্বিক প্রমানের উপর ভিত্তিতে ওই চিত্রপটকে রূপ দেওয়া। 


জ্ঞান ও বিজ্ঞানের প্রকার ভেদে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা একটি হলো 

বৈষয়িক জ্ঞান


বৈষয়িক জ্ঞান হলো সেই জ্ঞান যা মানুষের জীবনকে উন্নতভাবে এবং সাচ্ছন্দে চলার জন্যে অর্জন করে থাকে।  যেমন ব্যবসা বাণিজ্য সম্পর্কিত জ্ঞান। আবার যেমন ভাল করে জীবন নির্বাহ করার জন্যে জ্ঞান। ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ডাক্তারি  এই সমস্ত জ্ঞান যা শুধু নিজের জন্যে মানুষ অর্জন করে থাকে তা সবই হলো বৈষয়িক জ্ঞান। সমাজে একজন প্রতিষ্টিত ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে পরিচিত লাভ করার জন্যে সকল জ্ঞান কে বৈষয়িক জ্ঞান বলে। 

আধ্যাত্মিক তত্ত্বজ্ঞান 


এই জ্ঞান হল দার্শনিক ও মানবতার জ্ঞান। এই জ্ঞানের দ্বারা মানুষের মনের বিকাশ এবং মানবিক উন্নতির লক্ষ্যে আত্মবিশ্লেষণ করা। এটি আধুনিক বিজ্ঞানের বাইরে চিন্তা করার একটি মাধ্যম। এবং এটি আত্ম বিশ্লেষণ এর জ্ঞান। এবং এই আত্ম বিশ্লেষণ এবং বিশেষ ভাবে জানার মধ্যম আপনি নিজেকে খুঁজে পাবেন। মানুষের  জন্ম মৃত্যুর আসল রহস্য খুঁজে পাবেন। 


এই আধ্যাত্মিকতা আপনাকে আত্মসাক্ষাৎকারের উপায় দেখিয়ে দেয় এবং নিজেকে জানার জন্যে আত্মবিশ্লেষনের জন্যে একটি উপযুক্ত উপায় । এটি ভারতীয় পৌরনিক সাহিত্যের একটি অংশ। এই আধ্যাত্মিক তত্বজ্ঞান আপনাকে বিশালত্বে নিয়ে যেতে পারেন। এটি গভীর চিন্তার মাধ্যমে আপনি এই জ্ঞান লাভ করতে পারবেন। এবং আরো আরো গভীর চিন্তার মাধ্যমে সূক্ষ হতে অতি সূক্ষ বিষয় আপনি জানতে পারবেন। যাকে আধ্যাত্মিক জ্ঞান বিজ্ঞান বলে। 


এবং এই অধিতত্ব আপনাকে একজন দার্শনিক করে তুলবে। এবং আধ্যাত্মিক জ্ঞান বিজ্ঞান আপনার চেতনার মূলনীতি হিসেবে ধরা হয় । এটি জানতে পারলে মানুষ সরল হয় ,মানবিক হয় এবং সর্বোপরি প্রতিটা জীবের প্রতি প্রেম এবং গভীর ভালোবাসায় উপনীত হতে পারেন । যা সমস্ত স্বার্থের উর্ধে ।

  

জ্ঞান বিজ্ঞান অর্জনের উপায় 


একজন ব্যাক্তির জ্ঞান বিজ্ঞান অর্জন করতে হলে তাকে সেই সমস্ত ব্যক্তির সাথে সংগ করা দরকার। যারা আত্ম বিশ্লেষক এবং যারা মানবতার কাজ করে। এবং বিভিন্ন ধরণের জ্ঞানের পুস্তক পড়ার মাধ্যমে এবং মেডিটেশনের মাধ্যমে আপনি জ্ঞান বিজ্ঞান অর্জন করতে পারেন। আরো অনেক উপায় আছে। 


আসলে আমাদের এই পৃথিবীর সমস্ত জায়গায় আপনি জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন। এবং নেতি নেতি বিচার করে আপনি নিজেকে খুঁজে পাবেন। বস্তুত জ্ঞান এবং বিজ্ঞান মানে হলো নিজেকে খুঁজে পাওয়া। এবঙ্গ আপনার মধ্যে গভীর আগ্রহ এবং ব্যাকুলতায় আপনাকে জ্ঞান বিজ্ঞান অর্জনের উপায় খুঁজে দিতে পারেন ।

 

শেষ কথা 


জ্ঞান বিজ্ঞান কি সেই সম্পর্কে আসলে মুখে বলার মত কিছুই নেই। কারণ এই বিষয় গুলি হলো সব কিছু আপনার অনুভবের স্তর। যা আপনি নিজে জেনে মনে অনুভব করবেন। কারণ আপনি যে জ্ঞান অর্জন করেছেন সেটি নিজে অনুভব করা হলো বিজ্ঞান। এই অনুভব ই সব।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪